বিলীন হচ্ছে পাহাড়: সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিন

এফএনএস | প্রকাশ: ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম
বিলীন হচ্ছে পাহাড়: সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিন

সৌন্দর্যবর্ধন প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী পাহাড় অবাধে কাটা হচ্ছে। পাহাড় কেটে নির্মিত হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে নষ্ট হচ্ছে। পাহাড় কাটার সময় প্রতিরোধ করতে গেলে অনেক সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পাহাড়খেকোদের মারমুখী আচরণের শিকার হচ্ছেন। গত চার দশকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১২০টির মতো পাহাড় বিলীন হয়ে গেছে। ৪০ বছর আগেও ২০০ পাহাড় ছিল, যার ৬০ শতাংশ ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। ইংরেজ শাসনের পর পাকিস্তানে ২৪ বছরে কমেছে পাহাড়ের সংখ্যা। স্বাধীনতার পর ২০০৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের ৮৮টি পাহাড়ের সবই বিলুপ্ত হয়েছে। একই সময়ে আংশিক কাটা হয়েছে ৯৫টি। এরপরের ১২ বছরে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পাহাড় নিধন।  বাংলাদেশের বন গবেষণাবিষয়ক একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিএফআরআই। সূত্রমতে, বিএফআরআই প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাহাড়ের চারপাশে অবৈধ দখলদারের উৎপাত শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে পাহাড়ের চারপাশে বহুতল ভবনের সংখ্যা বাড়ছে। পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য অনেক ডেভেলপার কোম্পানি যেমন আছে, তেমনি আছেন সাবেক মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়স্বজনও। অতীতে দেখা গেছে, বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাহাড় ধ্বংসের সঙ্গে সংস্থাটির কতিপয় কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। এদের অনেকেই অবসরে গেছেন। এ কারণে নির্বিঘ্নে পাহাড় কেটে বসতঘর নির্মাণ করতে পেরেছে অবৈধ দখলদাররা। ৫ আগস্টের পর দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে এবং বিগত সরকারের নেতা-কর্মীরা দেশছাড়া হয়েছেন বা আত্মগোপনে রয়েছেন। এর পরও থেমে নেই পাহাড় ধ্বংসের কার্যক্রম। বিএফআরআইয়ের পাহাড়ের অবৈধ দখলদাররা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। এখনো বিগত সরকারের সময়ের দখলদাররা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে সেই দখল বজায় রেখেছেন। রাষ্ট্রীয় হোক, ব্যক্তিমালিকানাধীন হোক, সব ধরনের পাহাড় ও টিলা কাটা বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ুটিলা সংরক্ষণে আলাদা জরিপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। যারা এ কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনও এ ব্যাপারে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, যে কারণে হরহামেশাই পাহাড় নিধন হচ্ছে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি থেকে এ দেশকে রক্ষার জন্য পাহাড়ের ধ্বংস ঠেকাতে হবে। তাই চট্টগ্রামের সকল পাহাড় সংরক্ষণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করতে হবে।