ছাত্রদল নেতাকে হত্যা: ২১ জনের নামে মামলা

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:২০ পিএম
ছাত্রদল নেতাকে হত্যা: ২১ জনের নামে মামলা

শেখ হাসিনার মৃত্যুদন্ডের রায়ে উল্লাসিত হয়ে মিষ্টি বিতরণের সময় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাসহ ২১ জনের নামোল্লেখ ও ৮/১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাবুগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন-ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

সূত্রমতে, নিহত ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলামের বাবা মিজানুর রহমান ওরফে দুলাল হাওলাদার বাদি হয়ে থানায় দায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি করা হয়েছে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিবের পদ প্রত্যাশী আউয়াল হাওলাদারকে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন-নতুন চর জাহাপুর গ্রামের খলিল খানের ছেলে আমির খান, চর ফতেপুর এলাকার মৃত মালেক চৌকিদারের ছেলে ফিরোজ চৌকিদার, ঠাকুরমল্লিক গ্রামের ফারুক হাওলাদারের ছেলে নাবিদ হাসান শান্ত, নতুন চর জাহাপুর এলাকার জয়নাল মাঝির ছেলে মো. এমদাদুল ও জহিরুল ইসলাম, ঠাকুর মল্লিক গ্রামের রহিম ফরাজীর ছেলে শফিউল আযম শাহীন, ইসলামপুর গ্রামের জলিল জমাদ্দারের ছেলে আমিনুল ইসলাম লিপন, ঠাকুর মল্লিক গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান কবিরাজ, চর হোগলপাতিয়া এলাকার জব্বার সরদারের ছেলে মিলন সরদার,  জাহাপুর গ্রামের গফুর সরদারের ছেলে সাইদুর রহমান, সিলনদিয়া গ্রামের বারেক হাওলাদারের ছেলে সুজন হাওলাদার, ঠাকুর মল্লিক গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে বাবুল হাওলাদার ওরফে আম বাবুল, সিলনদিয়া গ্রামের কালাম মোল্লার ছেলে রোকন মোল্লা, নতুন চর জাহাপুর গ্রামের খোকন বেপারীর ছেলে সাদ্দাম বেপারী,

চর হোগলপাতিয়া গ্রামের মৃত কাইয়ুম খানের ছেলে খান মোহাম্মদ সোহাগ, নতুন চর জাহাপুর এলাকার কাদের মুন্সির ছেলে শফিকুল ইসলাম, চর ফতেপুর গ্রামের মৃত বারেক হাওলাদারের ছেলে শফিকুল ইসলাম সবুজ হাওলাদার, নতুন চর জাহাপুর গ্রামের কাদের মুন্সীর ছেলে রফিক মুন্সি, নতুন চর ভূদেরদিয়া গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের ছেলে রাজু হাওলাদার, নতুন চর জাহাপুর গ্রামের ছত্তার বেপারীর ছেলে সুমন বেপারী ও একই গ্রামের আব্দুর রহমান হাওলাদারের ছেলে আব্দুল্লাহ হাওলাদার। এছাড়াও মামলায় আরও ৮/১০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সুলতান আহমেদ খান বলেন, এই হত্যাকান্ডকে কোনোভাবেই ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার কোন সুযোগ নেই। যারা প্রকৃতভাবে ঘটনার সাথে জড়িত, শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হোক,  এটাই আমাদের প্রত্যাশা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে কাউকে যেন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার মৃত্যুদন্ডের রায়ে উল্লাসিত হয়ে গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করছিলেন। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রদল সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. আউয়াল হাওলাদারের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে আউয়াল হাওলাদার ও তার সহযোগিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করেন।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওইসময় হামলা ও সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে আটজন আহত হয়। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অপরদিকে গত দুইদিন থেকে ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলামের খুনীদের গ্রেপ্তারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করেছেন ইউনিয়নবাসী।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে