রাজধানীতে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত ইমাম খতিব জাতীয় সম্মেলনে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় আলেমদের নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, নামাজের ইমাম যেদিন সমাজের ইমাম হবেন সেদিনই সত্যিকারের মুক্তি মিলবে। রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার, ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে তিনি ইমাম ও খতিবদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।
সমাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নেতৃত্বে ধর্মীয় জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার থাকা উচিত উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, মসজিদ কেন্দ্রিক সমাজই ইতিহাসে মানুষের জন্য সর্বোত্তম কল্যাণ বয়ে এনেছে। তিনি মনে করেন, ইমাম ও খতিবরা কারও দয়ার পাত্র নন, বরং সমাজের প্রকৃত নেতৃত্বের যোগ্য ব্যক্তি। তাই মসজিদ কমিটি পরিচালনাও হওয়া উচিত তাদের পরামর্শকে কেন্দ্র করে।
সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগের উদাহরণ টেনে বলেন, মসজিদকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্র পরিচালনার যে পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাকে তিনি বিশ্বের সর্বোত্তম সমাজব্যবস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার ভাষায়, মনগড়া তন্ত্র বা মতবাদ দিয়ে তৈরি সমাজ কখনো শান্তি ও মর্যাদা এনে দিতে পারে না, এটি বহুবার প্রমাণিত সত্য।
সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশ কোরআনে বিশ্বাসী, আর সে কারণেই দেশে প্রকৃত মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কোরআনভিত্তিক আইন বাস্তবায়ন জরুরি। তিনি বলেন, কোরআন শুধু মানুষের অধিকার নয়, সব সৃষ্টির অধিকারের নিশ্চয়তা দেয় এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে অন্য ধর্মাবলম্বীরাও পূর্ণ নিরাপত্তা পাবে।
ইমাম খতিবদের দাবির প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শুধু সম্মানজনক ভাতা বা প্রশাসনিক সুবিধা নয়, বরং তাদের যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি মসজিদ পরিচালনায় ইমামদের প্রভাব কমিয়ে দেওয়ার প্রবণতারও সমালোচনা করেন এবং বলেন, ভুল হলে সমাধান দিতে হবে সম্মানের সঙ্গে, অপমানজনক আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র ইমাম মাওলানা মুহিব্বুল্লাহিল বাকি আন নদভী। সম্মেলনে ইমামদের সামাজিক নিরাপত্তা, ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ, মসজিদ পরিচালনার আধুনিক নীতিমালা তৈরিসহ বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করা হয়।