রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সকাল থেকে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির স্কুলিং মডেলভিত্তিক খসড়া অধ্যাদেশ উচ্চমাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, এমন অভিযোগ তুলেই রোববার (৭ ডিসেম্বর) বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল সড়কটি অচল হয়ে পড়ে।
দিনের শুরুতে ঢাকা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাদের অভিযোগ, স্কুলিং মডেল চালু হলে উচ্চমাধ্যমিকের স্বতন্ত্র কাঠামো হারিয়ে যাবে। পরে মিছিল শাহবাগের দিকে আসলে মোড়টি দ্রুত পূর্ণ হয়ে যায় এবং যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রস্তাবিত কাঠামো চূড়ান্ত হলে কলেজগুলোর পরিচিতি ও কার্যক্রমে চাপ বাড়বে। ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলিং মডেল কার্যকর হলে পাঁচটি কলেজেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের অস্তিত্ব থাকবে না। তিনি বলেন, তারা আগে থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন এবং বাতিলের ঘোষণা ছাড়া তারা শাহবাগ ছাড়বেন না।
পাশাপাশি সাত কলেজের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও আলাদা কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামেন। বহুদিন ধরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একীভূত করার উদ্যোগ ঝুলে থাকার পর খসড়া অধ্যাদেশ প্রকাশ হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় তাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাদের দাবি, দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করা না হলে পরিচয় সংকট এবং অ্যাকাডেমিক অনিশ্চয়তা দীর্ঘায়িত হবে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে মতামত গ্রহণ এবং তিন দফা বৈঠক হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এতে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানান, শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে এবং অধ্যাদেশ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি স্থগিত করবেন না।
এদিকে ডিএমপির রমনা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঁচ কলেজের দশ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ে নেওয়ার উদ্যোগ চলছে। তবে আলোচনার অগ্রগতির খবর আসার আগেই শাহবাগ মোড়ে যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে।