দেশের সামনে কঠিন সময় আসছে, বিভিন্ন মহল থেকে ষড়যন্ত্র চলছে, আর এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণ ও গণতন্ত্রই হতে পারে সবচেয়ে বড় শক্তি। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশে আয়োজিত বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আস্থা ও সতর্কতার কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, সামনে দেশের জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই সতর্কতা দিয়ে আসছেন, আর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তার আশঙ্কাকে আরও স্পষ্ট করেছে। তারেক রহমানের দাবি, বিভিন্নভাবে বিভিন্নরকম ষড়যন্ত্র চলছে, আর এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জনগণকেই ভরসা করতে হবে। তার ভাষায়, “ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে এই দেশের জনগণ, আর জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে বিএনপি।”
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। স্বাধীনতার সময় যেমন লাখো মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়েছিল, তেমনি দেশ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা সফল করতে হলে সবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোতে হবে। দলীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “মানুষকে ভালো অবস্থানে নিতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
দুর্নীতি ও অরাজকতার বিষয়েও কঠোর অবস্থান জানান তিনি। তারেক রহমান বলেন, দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অন্য যেকোনো পরিকল্পনাই ব্যর্থ হবে। তার দাবি, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও কেবল বিএনপিই দুর্নীতির লাগাম টানতে পারে। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন অরাজকতা বিরাজ করছে, আর এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে রাজনীতিতে ধর্মীয় বক্তব্য বা প্রতিশ্রুতি ব্যবহারের সমালোচনা করেন তিনি। মানুষের পরকাল নিয়ে রাজনৈতিক ভাষ্যকে তিনি ভুল ও বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেন। তার মন্তব্য, “বেহেশত বা দোজখ দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ। এগুলো যারা বলে তারা শিরক করছে।”
এ সময় জামায়াতে ইসলামের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা বলে এবার তাদের দেখুন, সেই দলকে মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। স্বাধীনতার যুদ্ধে কীভাবে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল, জনগণ তা জানে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় সরকার প্রসঙ্গেও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন তারেক রহমান। তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের সময় বিএনপি জাতীয় সরকারে না গিয়ে জনগণের রায়কে প্রাধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ তাদের বিশ্বাস, জনগণই ক্ষমতার উৎস।
সভায় আরও জানানো হয়, আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি নির্বাচনের প্রত্যাশা করছে বিএনপি। দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।