জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট একই দিনে আয়োজনের কারণে ভোটগ্রহণের সময় বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের দশম বৈঠক শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ।
কমিশন বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ রেকর্ডের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারকে ভাষণ রেকর্ডের জন্য পত্র পাঠানো হবে।
নির্বাচন কমিশনার জানান, এক দিনে সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট হওয়ায় ভোটদাতাদের চাপ সামলাতে সময় বাড়ানো হয়েছে। ভোটাররা সকালে আধা ঘণ্টা এবং বিকেলে আধা ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় পাবেন। তিনি বলেন, ভোটের আগের রাতেই ব্যালট পেপারসহ সব নির্বাচনী সামগ্রী প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে, যাতে ভোটের দিন কোনো ধরণের ঝামেলা না হয়।
তফসিল ঘোষণার আগে প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো তালিকা পর্যালোচনা করে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভোটকর্মী হিসেবে রাখা হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিয়মিত দায়িত্বে রাখা হয়নি, তবে প্রয়োজন হলে রিজার্ভ তালিকা থেকে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
কেন্দ্রে ভোটদাতাদের সুবিধার জন্য বাড়তি গোপন বুথ স্থাপন করা হবে। যেখানে জায়গা কম, সেখানে অস্থায়ীভাবে অতিরিক্ত বুথ তৈরি করা হবে। বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন এমন ভোটারদের জন্য আলাদা নির্দেশনা থাকবে। গণভোটের প্রশ্নটি যাতে ভোটাররা প্রবেশের আগেই বুঝতে পারেন, সেজন্য প্রতিটি কেন্দ্রে বড় আকারে ছাপানো ব্যালট লাইন ঝোলানো হবে।
কমিশনের আরেক আলোচ্য ছিল প্রচারণা বিধি। সানাউল্লাহ জানান, তফসিল ঘোষণার পরই আচরণবিধি বাস্তবায়নে দুইজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করবেন। যে সব পোস্টার বিধি লঙ্ঘন করেছে সেগুলো অপসারণের জন্য উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হবে।
নির্বাচনের নিরাপত্তাব্যবস্থাও কঠোর হচ্ছে। ভোটের দিন মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি এবং সাধারণ যান চলাচল ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে, আর ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে ৭২ ঘণ্টা। তবে জরুরি পরিসেবা চালু থাকবে।
নির্বাচন কমিশনের ভাষ্যমতে, চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আলোচনার সূচিতে রয়েছে ৮ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভাব্য সময়সীমা। প্রস্তুতি ও কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে, এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।