শীতের ঠান্ডা বাতাসে ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারায়, ফলে দেখা দেয় রুক্ষতা, খোসা ওঠা আর টানটান অস্বস্তি। বাজারে নানান ময়েশ্চারাইজার থাকলেও এ সময় গ্লিসারিন ও পেট্রোলিয়াম জেলিই অনেকের ভরসার নাম। তবে প্রশ্ন হলো শীতে ত্বকের আসল সঙ্গী কোনটি? আর্দ্রতা টেনে আনে গ্লিসারিন, নাকি আর্দ্রতা লক করে রাখা জেলি? চলুন জেনে নেওয়া যাক কোনটি আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী-
পেট্রোলিয়াম জেলি
পেট্রোলিয়াম জেলি মূলত ‘অক্লুসিভ’, এটি ত্বকের ওপর এমন একটি প্রাকৃতিক আবরণ তৈরি করে, যা ত্বকের ভেতরের পানি বের হতে বাধা দেয়। আর্দ্রতা ধরে রাখায় এটি প্রায় ৯৯ শতাংশ কার্যকর।
এর মূল কাজ-
*ত্বকের ভেতরের আর্দ্রতাকে ভেতরেই আটকে রাখে।
*খুব শুকনো অংশে (যেমন কনুই, হাঁটু, গোড়ালি) দ্রুত আরাম দেয়।
*ফাটা ঠোঁট বা ছাল ওঠা জায়গায় অসাধারণ কাজ করে।
*একজিমা বা সংবেদনশীল অংশে সুরক্ষামূলক আবরণ তৈরি করে।
*ত্বকে হালকা আঠালো অনুভূতি থাকে, যা শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।
যাদের জন্য উপযোগী-
*অত্যন্ত শুষ্ক, রুক্ষ ও পানি শূন্য ত্বক।
*ফাটা ঠোঁট, ফাটা গোড়ালি।
*একজিমা বা চর্মরোগে ভোগা মানুষ।
*যারা ত্বকে বাধা স্তর তৈরি করতে চান।
গ্লিসারিন
গ্লিসারিন হলো একটি শক্তিশালী ‘হিউমেকট্যান্ট’, এটি পরিবেশ থেকে আর্দ্রতা টেনে এনে ত্বকে যোগ করে। হালকা ভেজা ত্বকে ব্যবহার করলে এটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
এর মূল কাজ-
*পরিবেশের আর্দ্রতা শোষণ করে ত্বকে পৌঁছে দেয়।
*ত্বককে নরম, কোমল ও উজ্জ্বল করে।
*তেলচিটে ভাব ছাড়াই আর্দ্রতা যোগায়।
*ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ।
*দ্রুত শোষিত হয়, ত্বককে মসৃণ রাখে।
যাদের জন্য উপযোগী-
*নর্মাল থেকে হালকা শুষ্ক ত্বক।
*ব্রণপ্রবণ ত্বক।
*যারা হালকা ও তেলমুক্ত অনুভূতির ময়েশ্চারাইজার পছন্দ করেন।
*শীতের মাঝামাঝি সময় যখন বাতাস তুলনামূলক আর্দ্র থাকে।
খুবই শুকনো আবহাওয়ায় (যেমন হিমেল বাতাস বা কম আর্দ্রতা) গ্লিসারিন কখনও কখনও ত্বকের ভেতরের পানিও টেনে নিতে পারে, ফলে উল্টো ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই খুব রুক্ষ আবহাওয়ায় গ্লিসারিন একা ব্যবহার না করাই ভালো। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে সর্বোচ্চ উপকার পেতে চাইলে গ্লিসারিন ও পেট্রোলিয়াম জেলি একসঙ্গে ব্যবহার করাই সবচেয়ে কার্যকর। একে বলে, ‘স্কিন লেয়ারিং মেথড’।