সাংবাদিককে হাতুড়ি পেটা করেছে পুলিশ সদস্য

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম
সাংবাদিককে হাতুড়ি পেটা করেছে পুলিশ সদস্য

বরিশাল নগরীর একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফাকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে এক পুলিশ সদস্য।

গুরুত্বর আহতাবস্থায় সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফাকে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি (সাংবাদিক) এশিয়ান টেলিভিশন বরিশালের ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সাথে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ একাধিক সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। অপরদিকে হামলাকারী নাভিদ আনজুম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের আমানতগঞ্জ ফাঁড়িতে কর্মরত রয়েছে। হামলার ঘটনার পর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তাকে (নাভিদ আনজুম) হেফাজতে নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফা জানিয়েছেন, নাভিদ আনজুমের সাথে তার পরিচয়ের সূত্রধরে প্রায়ই সে (নাভিদ) তার বরিশাল নগরীর গোড়াচাঁদ দাশ রোডের আল জামিয়া মাদ্রাসা ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়া অফিসে আসতেন। পরবর্তীতে তিনি (ফিরোজ) জানতে পারেন ওই পুলিশ সদস্য মাদক সেবন ও অনলাইন ক্যাসিনো চক্রের সাথে জড়িয়ে পরেছে। বিষয়টি জানার পর ওই পুলিশ সদস্যর কাছ থেকে সে এড়িয়ে চলতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাভিদ তার ই-মেইল আইডি হ্যাক হওয়ার অভিযোগ তোলেন ফিরোজ মোস্তফার ওপর। যা নিয়ে বিভিন্ন সময় নানানভাবে ঝামেলা করে আসছিলো নাভিদ।

ফিরোজ অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাঈদ ও পুলিশ সদস্য নাভিদ আমার ওপর ক্ষুব্দ হয়। এরইমধ্যে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে কনস্টেবল নাভিদ গোড়াচাঁদ দাশ রোডের আমার (ফিরোজ) বাসায় ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে তাকে রুমের মধ্যে রেখে বাহিরে থেকে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায় কনস্টেবল নাবিদ। পরবর্তীতে নিজেকে বাঁচাতে ফিরোজ ৯৯৯ এ ফোন করে সহযোগিতা চান। পরে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ আহত ফিরোজ মোস্তফাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আল মামুন উল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টবল নাভিদ আনজুমকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছিলো। ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগ না পাওয়া হেফাজতে আনা পুলিশ সদস্য নাভিদ আনজুমকে আমানতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

তবে সুস্থ হয়ে হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করার কথা জানিয়েছেন আহত সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফা। অপরদিকে সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্য নাভিদ আনজুম কর্তৃক হাতুরি পেটা করার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারী পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাংবাদিক নেতারা। একবিবৃতিতে এ দাবি করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। এছাড়াও সাংবাদিককে হাতুরি পেটার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে