অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন, তবে উপদেষ্টা পদ ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। শেষ দিকে সাংবাদিকরা পদত্যাগ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি স্থির, তবে কোন দল থেকে প্রার্থী হবেন তা পরে জানানো হবে। তিনি বলেন, “পদত্যাগের বিষয়ে আমার কিছু বলার এখতিয়ার নেই, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকেই জানানো হবে।”
সচিবালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলন ছিল আগে থেকেই নির্ধারিত। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছিল যে উপদেষ্টা সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে আগ থেকেই জোর গুঞ্জন ছিল যে তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। অনেকে বলছিলেন, ঢাকা ১০ আসন থেকে নির্বাচনে নামতে চান তিনি এবং ইতোমধ্যেই ওই আসনে ভোটারও হয়েছেন।
সরকার-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যমুনায় অনুষ্ঠিত নিয়মিত বৈঠকে দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগ ইস্যু নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হয়। তপশিল ঘোষণার পর তাদের সরকারে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। উচ্চপর্যায় থেকে কয়েক মাস ধরেই পদত্যাগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছিল।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তখন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া তিন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা পদ পান। নাহিদ ইসলাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন, আসিফ মাহমুদ প্রথমে শ্রম উপদেষ্টা হয়ে পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব পান, আর মাহফুজ আলম বিশেষ সহকারী হিসেবে যোগ দিয়ে পরে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা হন। এর মধ্যে নাহিদ ইসলাম পরবর্তীতে পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হন।
সংবাদ সম্মেলনে সম্পদের বিবরণী প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ জানান, তিনি সকালে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেছেন এবং কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছেন। কোন দলের প্রার্থী হবেন বা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কি না, এসব প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, “বাকিটা প্রেস উইং জানাবে।”
তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে জল্পনা তুঙ্গে। নির্বাচন কমিশন সন্ধ্যায় বা বৃহস্পতিবার তফসিল দিতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। তার আগেই দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদ ছাড়ার আলোচনা আরো জোরালো হয়েছে।