নাগেশ্বরীতে শীতে কাবু ছিন্নমূল মানুষ

এফএনএস (হাফিজুর রহমান হৃদয়; নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম) : | প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম
নাগেশ্বরীতে শীতে কাবু ছিন্নমূল মানুষ

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় বইছে ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতা। গত এক সপ্তাহ ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। শীতের দাপট আর হিমেল বাতাসে জনজীবনে নেমে এসেছে ভোগান্তি। জুবুথুবু হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। এ অবস্থায় কাবু হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের ছিন্নমূল মানুষ। দিনের অর্ধেকটাই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে চারদিক। দিনের বেলাতেও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে দূর পাল্লার বাস ও অন্যান্য সকল যানবাহন। এতে করে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন অনেকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সেখানে দিনদিন ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই যেমন শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ডায়েরিয়া, আমাশয়, জ্বর, স্বর্দি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে সিট না পেয়ে অনেকেই অবস্থান নিয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়। বেশি বিপাকে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে। এছাড়াও গবাদি পশু পাখি নিয়েও বিপাকে পড়ছেন খামারীরা। চরবেষ্টিত কচাকাটা ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার হোসেন (৬২) জানান ঠাণ্ডা হোক আর গরম হোক এসব দিয়ে কী হবে। কাজ করার কপাল কাজ করে খেতে হয়। তাই ভোরবেলাতেই চরের জমিতে কাজ করতে এসেছেন তিনি। তৈরি করছেন বোরো বীজতলা। তবে ঘণ কুয়াশা আর প্রবল শীতে বীজতলা নিয়ে চিন্তিত তিনি। বিধবা ছারভান বেওয়া (৫৫) জানান তার স্বামী, ছেলে কেউ নেই। এই ঠণ্ডায় রাতের বেলা পুরনো কাপরের তৈরি কাঁথা গায়ে রাত কাটে তার। এত কষ্ট করে দিন পার করলেও চেয়ারম্যান মেম্বাররা খোঁজ নেয় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন মেম্বারের ওডি গেলে খালি নাই নাই করে। আর যাই বড়লোক তাহে খালি একান সেকান দেয়। লুতফা বেগম (৪৮) জানান জানান, প্রচন্ড শীত আর ঠাণ্ডায় বের হতে পারছেন না তারা। নিজে কাজ করতে পারেন না। শীতের পোষাক না থাকায় বহু কষ্টে থাকতে হয়। খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহান তিনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ কম্বল ক্রয় করা হয়েছে এবং ডিসি অফিস থেকে পেয়েছি ৮০০ কম্বল। এগুলো একযোগে উপজেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সামনে যেহেতু শীত বাড়ার সম্ভাবনা আছে সেহেতু আমরা আরও বরাদ্দ পাব। সেগুলোও শীতার্তদের মাঝে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি ও  আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান  আজ (শুক্রবার) সকাল ৬ টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনের দিনগুলোতে শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে তাপমাত্র কমতে পারে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এ জেলার উপর দিয়ে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে