কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় কলেজ শিক্ষার্থী ও তার মা চাচা গুরুতর আহত হয়েছে। বর্তমানে তারা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। শুক্রবার সকালে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নের মাঝিরকোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর বিবরণে জানা যায়, করিমগঞ্জ উপজেলার মাঝিরকোনা গ্রামের মৃত আ.খালেকের সন্তান মহরম আলীদের সাথে একই গ্রামের আ.রশিদের ছেলে ফারুক গংদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। ঘটনার দিন সকালে আ.রশিদের ছেলে ফারুকের নেতৃত্বে তার ভাই মুসলিম,আরিফ, খোকন ও তার ছেলে আরমান এবং ভাতিজা তুহিন গংদের নিয়ে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আ: খালেকের বাড়িতে পুর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগ সাজশে বেআইনী জনতাবদ্ধে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে গাছপালা কেটে ত্রাস সৃষ্টি করে। এ সময় আ: খালেকের ছেলে ওমর আলী তাদেরকে বাঁধা দিলে তাকে রামদা দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য পেছন দিক দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে হারকাটা রক্তাক্ত জখম করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় করিমগঞ্জ সরকারী কলেজের অনার্স পড়ুয়া আশিকুর রহমান রিয়ান ও তার মা হাবিবা আক্তার লাকী ওমর আলীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ওমর আলীর মাথায় ৫টি সেলাই ও হাবিবা আক্তার লাকীর মাথায় ৬টি সেলাই করা হয়েছে। কলেজ শিক্ষার্থী রিয়ানের মাথায় প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত ওমর আলী বলেন,গতরাতেও আমাদের বাড়িতে ফারুক গংরা দলবল নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে মারপিট করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় উদ্ধার হয়ে বিষয়টি থানায় অবহিত করে অভিযোগ দিয়ে আসি। আজ শুক্রবার সকালে পুর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে আমাদেরকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। শান্তি বজায়ে অভিযোগ দিয়েও রেহাই মিলেনি। আমি ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় এনে তদন্তসাপেক্ষে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপুর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। জাফরাবাদের স্থানীয় ইউপি সদস্য সারোয়ার আলম হান্নান বলেন,দীর্ঘ দিন যাবত আ.খালেকের ছেলে ওমর আলীদের সাথে একই গ্রামের আ.রশিদের ছেলে ফারুকদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। গত এক সপ্তাহ যাবত ফারুক গংরা ওমর আলীদের বাড়িতে গিয়ে জমি দাবী করে কোট মেরে গাছপালা কেটে দেন। এ নিয়ে ওমর আলী গংরা দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফারুকরা আজ হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আ.খালেক জীবদ্দশায় কোনোদিন আ.রশিদ ও তার সন্তানদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ হয়নি। উভয়ে মারা যাওয়ায় এবং জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় আ.রশিদের সন্তানরা এখন জমি দাবী করে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বসলে এমনকি সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মাপজোক করা অবস্থায় আ.রাশিদের সন্তানরা শালিস উপেক্ষা করে আ.খালেকের সন্তানদেরকে মারধোর করে। এ ঘটনার বছর না ফেরতেই আজকে আ.খালেকের বাড়িঘড়ে হামলা চালিয়ে মারধোর করে গাছপালা কেটে দিয়ে কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এমন ঘটনায় হতবাক আমরা। এ বিষয়ে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা মুহাব্বত বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করেছি। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।