যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০ জানুয়ারি সোমবার, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় শপথ গ্রহণের পর তিনি তার প্রথম ভাষণে আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন। তার মতে, আজ থেকে সবকিছু বদলে যাবে, এবং এটি হবে একটি নতুন যুগের সূচনা।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “আমেরিকা শীঘ্রই আরও শক্তিশালী, বৃহত্তর এবং ব্যতিক্রমী হয়ে উঠবে। আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের দেশ এখন এক নতুন যুগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।” তিনি বিশেষভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা তার মতে, সংকটময় পরিস্থিতিতে তেমন কার্যকর নয়। ট্রাম্প দাবি করেন, “আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন আমাদের সন্তানদের শুধু লজ্জিত করতে শেখায়, এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যা দুর্যোগের সময় কাজেই আসে না। তবে আজ থেকে এসব সব কিছুই বদলে যাবে।”
এছাড়া, ট্রাম্প তার ভাষণে অভিবাসন, সীমান্ত নিরাপত্তা, এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "পূর্ববর্তী প্রশাসন অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল, কিন্তু আমাদের সরকারের সীমান্ত রক্ষা করতে কোনো তহবিল ছিল না। এই চ্যালেঞ্জগুলো অতি দ্রুত সমাধান করা হবে।"
তিনি আমেরিকার স্বর্ণযুগের সূচনা ঘোষণা করে আরো বলেন, “আমরা আবারও সম্মানিত হব, এবং আমাদের দেশের জনগণ গর্বিত ও সমৃদ্ধ হবে।” ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে, তার সরকার ইতোমধ্যে একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে অভিবাসন নীতি সংস্কার, শুল্ক আরোপ, এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্যোগ।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প ১০টি নির্বাহী আদেশ জারির পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অবৈধ অভিবাসী তাড়ানো, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধ করা, এবং দেশের অর্থনৈতিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা। তিনি তার প্রশাসনের নীতি অনুযায়ী, আমেরিকান গাড়ি শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন, যাতে দেশীয় উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়।
এদিন, ট্রাম্প তার ভাষণে পুরো দেশকে একত্রিত করার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি গর্বিত, সমৃদ্ধ এবং মুক্ত জাতি তৈরি করতে চাই।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, একসাথে কাজ করার মাধ্যমে দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
এছাড়া, ট্রাম্প তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেন এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই যুদ্ধ দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, "আমার পুতিন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তারা আমাকে সম্মান করে, এবং আমি নিশ্চিত যে, আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে পারব।"
ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ এবং তার ভাষণের পর, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ চিহ্নিত হয়েছে।