চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে আবারও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আহত বাংলাদেশির নাম হাবিল উদ্দীন। তিনি একই উপজেলার তেলকুপি গ্রামের বেলাল উদ্দীনের ছেলে। বিজিবি ও -’ানীয়রা জানান, রাতে হাবিলসহ ৭-৮ জন বাংলাদেশি তেলকুপি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন হাবিল। তার পিঠে গুলি লেগেছে। হাবিলকে চিকিৎসার জন্য শনিবার ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে হাবিলের পরিবারের সদস্যরা জানান, হাবিল চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। সীমান্তসংলগ্ন গম খেতে সেচ দিতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে আহত হলে -’ানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাবিলের সঙ্গে থাকা তার ভারি সুলেখা খাতুন বলেন, আমার দেবর কৃষি কাজ করেন। কৃষি কাজের জন্যই সীমান্তসংলগ্ন জমিতে যান। তাকে ভোর ৫ টার দিকে গুলি করা হয়। রাতে সে বাড়িতেই ছিল। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, হাবিলের শরীরে গুলি অ-্ত্রপাচারের মাধ্যমে বের করা হয়েছে। তাকে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। তবে তাকে আশঙ্কামুক্তই বলা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবির ৫৯ ব্যাটায়িলয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাত সাড়ে ৩ টার দিকে সীমান্তের ওপারে দুই থেকে তিন রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। শব্দ শোনার পর সকালে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানানো হয়। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সীমান্তের ১৮০ নম্বর পিলার সংলগ্ন এলাকায় বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানী কমাণ্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক উদ্ধৃত করে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, রাত সাড়ে ৩ টার পরে ৭-৮ জন বাংলাদেশি চোরাচালানী ঘন কুয়াশার সুযোগে ভারতে প্রবেশ করে। সীমান্ত থেকে ১৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বিএসএফ। এতে হাবিল আহত হয়েছেন। হাবিলের ভাবি সুলেখা খাতুনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, হাবিল চিহ্নিত চোরাকারবারী। আর রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে তেলকুপি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ৫ কিলোমিটার এলাকায় বাংলাদেশি কোন কৃষক অব-’ান করছিলেন না। ওই এলাকায় বিওপি কমান্ডারের নেতৃত্বে বিজিবির দুটি দল টহল দিচ্ছিল। তবে পতাকা বৈঠকে বিএসএফের গুলি চালানোর ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন বিজিবি অধিনায়ক। এর আগে ১০ জানুয়ারি রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার আরেক সীমান্ত আজমতপুরে বিএসএফের গুলিতে শহীদুল ইসলাম নামে এক চোরাচালানী আহত হন।