দুর্বল ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা বা বন্ড ফেরত পাবেন: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম | প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
দুর্বল ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা বা বন্ড ফেরত পাবেন: গভর্নর

দুর্বল ব্যাংকের আমানতকারীরা চলতি বছরেই তাদের জমাকৃত টাকা অথবা তার পরিবর্তে বন্ড বুঝে পাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক কর্মশালায় তিনি বলেন, ‘চলতি বছরই আমানতকারীরা তাদের টাকা বা বন্ড কিছু একটা পাবেন। তবে এটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।’  

গভর্নর বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ১০ বছর ধরে বলে আসছি, আপনারা এস আলমের ব্যাংকের মতো দুর্বল ব্যাংকে টাকা রাখবেন না। তারা বেশি সুদের প্রলোভন দেখিয়েছে, আর আপনারা তাতেই আকৃষ্ট হয়েছেন। এখন আমানত ফেরতের নিশ্চয়তা চাচ্ছেন।’ তবে তিনি গ্রাহকদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ধাপে ধাপে এই বছরেই আমানত ফেরত দেওয়া হবে।’  

সমবায় সমিতির মাধ্যমে গড়ে ওঠা অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বাজারের কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘এগুলো স্থানীয় পর্যায়ে লোন শার্ক তৈরি করছে, যা গ্রাহকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা পুনর্বিবেচনা করা হবে।’  

ক্ষুদ্র ঋণ খাতের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছর ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো তাদের এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে, যা ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিযোগিতা তৈরি করবে। তাছাড়া মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) ও ডিজিটাল ব্যাংকের উত্থানও নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।’

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ লাখ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫.২৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে ৯৭ হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে।

দুর্বল ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী তাদের আমানত তুলতে পারছেন না। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংককে সহায়তা দিতে টাকা ছেপেছে। তবে গভর্নর জানিয়েছেন, এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রেজুলেশন অ্যাক্টসহ বিভিন্ন নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।  

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, এমআরএ-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই দুর্বল ব্যাংকের আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।

গভর্নরের বক্তব্য অনুযায়ী, ধাপে ধাপে হলেও গ্রাহকরা তাদের টাকা ফিরে পাবেন, যা ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।  

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে