জ্বালানির বকেয়া পরিশোধে চাপ বাড়াচ্ছে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো

এফএনএস এক্সক্লুসিভ : | প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৮:০৮ এএম : | আপডেট: ১ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম
জ্বালানির বকেয়া পরিশোধে চাপ বাড়াচ্ছে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো

জ্বালানির বকেয়া পরিশোধে চাপ বাড়াচ্ছে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো। আমেরিকান প্রতিষ্ঠান শেভরন ও কাতার গ্যাস বিল পরিশোধে তাগাদা দিয়েছে। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হবে কাতারের গ্যাসের বকেয়া। আর বাংলাদেশের কাছে গ্যাস বিক্রি বাবদ মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের ২২০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পড়েছে। ওই অর্থ পরিশোধে জ্বালানি বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৭৫ মিলিয়ন ডলার অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে পরিশোধ করতে বলা হয়। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কাতারের রাস লাফফান লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের কাছে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বিক্রি করে। এ বাবদ প্রতিষ্ঠানটির পাওনা ১৫০ মিলিয়ন ডলার। ওই পাওনা অর্থ দ্রুত পরিশোধের তাগাদা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মোট ৩৭০ মিলিয়ন ডলার পাওনা পরিশোধে পেট্রোবাংলাকে বলা হয়েছে। সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার কাছে গ্যাস বিক্রি বাবদ শেভরনের মোট ২২০ মিলিয়ন ডলার পাওনা জমেছে। এর মধ্যে বিক্রীত গ্যাসের মূল্য ১৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং বাকি ভ্যাট ও সুদ হিসেবে ৪৫ মিলিয়ন ডলার জমেছে। যদিও শেভরনের বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু অর্থ একেবারে পরিশোধের মতো অবস্থা এখন নেই। আর জিটুজি ভিত্তিতে কাতারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি পেট্রোবাংলা আমদানি করছে। ওই এলএনজির মূল্য বাবদ ১৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পড়েছে। ওই বকেয়া দ্রুততার সঙ্গে পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে কাতার গ্যাস। তবে কাতার গ্যাসের বকেয়া পরিশোধে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কারণ জিটুজি চুক্তির আওতায় নির্দিষ্ট সময়ে বকেয়া পরিশোধে পেট্রোবাংলা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তা করা না হলে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বড় ঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, শেভরনের জরুরি ভিত্তিতে চাওয়া ৭৫ মিলিয়ন ডলারও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করার চেষ্টা চলছে। কারণ শেভরন দেশে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক গ্যাস সরবরাহে অর্ধেকেরও বেশি অর্থাৎ ৬০ শতাংশের জোগান দিচ্ছে। কোম্পানিটি বাংলাদেশে তিনটি গ্যাসফিল্ড পরিচালনা করছে। সেগুলো হলো বিবিয়ানা, জালালাবাদ ও মৌলভীবাজার। তার মধ্যে বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড থেকে সবচেয়ে বেশি গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। পেট্রোবাংলাকে গ্যাস সরবরাহ বাবদ প্রতি মাসে শেভরনের কাছ থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলারের মতো বিল আসে। কয়েক মাস ধরেই শেভরনের বিল বকেয়া জমেছে। গত ডিসেম্বরে শেভরন ইন্টারন্যাশনাল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ক্যাসুলো বাংলাদেশ সফর করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎতে বকেয়া বিল নিয়ে আলোচনা হয়। এদিকে দেশে গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতি পূরণে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে কাতার গ্যাসের কাছ থেকে কার্গোয় করে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। প্রতি বছর কোম্পানিটি গড়ে কম-বেশি ৪০ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করছে। চলতি অর্থবছরও কাতার থেকে মোট ৪০ কার্গো এলএনজি আমদানির কথা রয়েছে। এর অর্ধেক এরই মধ্যে দেশে এসেছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, শেভরন ও কাতার গ্যাস বিল পরিশোধে তাগাদা দিয়ে চিঠি দিয়েছে। তাদের বকেয়া টাকা কিছু পরিশোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে কাতারের গ্যাসের বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে