জাতীয় সংসদের বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে বিদ্যমান আইনে সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। মঙ্গলবার (৬ মে) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক-পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, পূর্ববর্তী সরকারের সময় রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ইচ্ছেমতো সীমানা নির্ধারণ করা হতো। বিষয়টি নিয়ে নানা রাজনৈতিক দলের অভিযোগ ছিল। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে এই আইনি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “বর্তমান আইনে একটি ব্যাখ্যাগত ভুল থাকার কারণে নির্বাচন কমিশন সীমানা পুনর্নির্ধারণের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে পারছিল না। এই সংশোধনী সেই জটিলতা দূর করবে। গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশের পর কমিশন চাইলে দুই-চার দিনের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারবে।”
এর আগে নির্বাচন কমিশন আইনটির ৪, ৬ ও ৮ ধারায় অস্পষ্টতা ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংশোধনের প্রস্তাব পাঠায়। সেই প্রস্তাবের আলোকে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি খসড়াটি যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করে।
উপদেষ্টা পরিষদের একই বৈঠকে ‘সিভিল প্রসিডিওর কোড (CPC)’ সংশোধনীরও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইন উপদেষ্টা জানান, সিপিসির সংশোধনের ফলে বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে চলা সিভিল মামলার দীর্ঘসূত্রতা অনেকাংশে কমে আসবে।
সংশোধিত আইনে:
• ইচ্ছামতো শুনানি মুলতবি করার সুযোগ আর থাকবে না।
• আদালতে আইনজীবীদের লিখিত বক্তব্য পাঠের সংস্কৃতি বাতিল করা হয়েছে; এখন লিখিত স্টেটমেন্টই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
• মামলার রায় কার্যকর করতে নতুন করে আর মামলা করতে হবে না, বরং মূল মামলার রায়ের মাধ্যমেই ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা আশাবাদী—এই আইনি সংস্কার সিভিল বিচার ব্যবস্থাকে দ্রুত ও কার্যকর করবে।”