নিজ নিজ সমাজে অর্থবহ পরিবর্তন আনতে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের তরুণদের রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৬ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নরওয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরুণ প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সাক্ষাতে তিনি এই আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করছি। কারণ তারা যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় যুক্ত না হয়, তাহলে ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণে তাদের ভূমিকা সীমিতই থেকে যাবে।”
সাক্ষাৎকালে নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাংলাদেশি তরুণদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানান, “আমরা এমন অনেক তরুণের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা তাদের জীবনে কখনোই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।” এ বিষয়ে তারা জানতে চান, অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায়।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নতুন সরকারের মূল অঙ্গীকার হলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। গত ১৫ বছর ধরে প্রকৃত ভোটাধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত ছিল। টানা তিন মেয়াদে একটি ভুয়া নির্বাচন ব্যবস্থা জারি ছিল, যাকে কর্তৃপক্ষ সাফল্য বলে প্রচার করেছে, অথচ বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন মূল কাঠামোতেই আমূল পরিবর্তন আনা।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এখনো অনেকটাই সেকেলে ও অনুন্নত। অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই ‘রাজনৈতিক জঞ্জাল’ পরিষ্কার করা এবং একটি নতুন কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করা।”
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা সফররত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, কর্মকাণ্ড এবং নরওয়ের মূলধারার রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণের হার সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, “এই সময়টি বাংলাদেশের জন্য এক ‘রূপান্তরকাল’। আমি আশা করি, এই রূপান্তর দীর্ঘস্থায়ী না হয়ে যথাসম্ভব দ্রুত শেষ হবে এবং দেশ একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে।”
নরওয়ের সফররত প্রতিনিধি দলে ছিলেন—সোশালিস্ট ইউথ লিগের উপনেতা নাজমা আহমেদ, ওয়ার্কার্স ইয়ুথ লীগের আন্তর্জাতিক নেতা ও কেন্দ্রীয় বোর্ড সদস্য ফাউজি ওয়ারসামে, সেন্টার পার্টির ডেন স্কফটারুড, কনজারভেটিভ পার্টির ওলা স্ভেনেবি, খ্রিস্টান ডেমোক্র্যাটসের হ্যাডলে রাসমুস বিজুল্যান্ড, গ্রিন ইয়ুথের টোবিয়াস স্টকেল্যান্ড এবং ইয়াং লিবারেলসের সাবেক নেতা থাইরা হাকনসলকেন।
প্রতিনিধিদলের তরুণ সদস্যরা বাংলাদেশে তরুণদের রাজনৈতিক অঙ্গনে অংশগ্রহণ ও সচেতনতা আরও বাড়ানোর সম্ভাবনার প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।