ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগ মোড় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রাখে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভে তাঁরা শুধুমাত্র বিচারের দাবি তোলেননি, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ ও পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন। অবরোধ চলাকালে টানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শাহবাগ চত্বর—যেখানে আন্দোলনকারীরা দাবি তোলেন, "সাম্য হত্যার বিচার চাই", "আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে", এমনকি "জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস"।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল ৩টা থেকে অবরোধ শুরু করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা পর বিকেল সোয়া ৫টার দিকে তাঁরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে যান, ফলে যান চলাচল আবারও স্বাভাবিক হয়। বৃষ্টির মধ্যেও নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচিতে দৃঢ়তা ছিল চোখে পড়ার মতো।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আন্দোলনে নিহত শাহরিয়ারের পিতা ফখরুল ইসলামও অংশ নেন।
অবরোধ চলাকালে নাছির উদ্দীন বলেন, “আর কোনো ছাত্রদল নেতাকর্মীর ওপর হামলা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।” তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানান এবং এতদিনেও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ না হওয়ায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এর আগে রোববার (১৮ মে) একই দাবিতে ছাত্রদল প্রায় দুই ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছিল। তখনও তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন এবং আন্দোলনের পরিধি আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন।
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।
ঘটনার পরদিনই শাহরিয়ারের ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।