সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সভায় সরকারি চাকরি সংক্রান্ত আইনে সংস্কারের জন্য ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন আরও দুইটি অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া গেছে, যা দেশের প্রশাসনিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ২৯তম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি শৃঙ্খলা এবং কর্মদক্ষতা বজায় রাখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। এতে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সহজেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন: কোনো কর্মকর্তা অন্য কর্মচারীদের মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করলে, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করলে, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে বা কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এই ধরনের আচরণের জন্য শাস্তি হিসেবে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।
এদিকে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর বাস্তবায়নযোগ্যতা, সময়সীমা এবং প্রভাবের ওপর দফায় দফায় মতামত উপস্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবে।
উক্ত সভায় সরকারি চাকরি সংশোধনের পাশাপাশি ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘দ্য প্রোটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়াও অনুমোদন পেয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস সরকারের মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষা সামগ্রী সংক্রান্ত সহযোগিতার একটি সমঝোতা স্মারকের প্রস্তাবও স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এই নতুন অধ্যাদেশগুলো দেশের সরকারি চাকরিজীবীদের কর্মজীবনে কড়া নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল ইস্যুগুলোতে পুনর্বাসন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।