সোনারগাঁয়ে বিজয় দিবসে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ : আহত ১০

এফএনএস (ফজলে রাব্বী সোহেল; সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ) :
| আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম | প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০৮ এএম
সোনারগাঁয়ে বিজয় দিবসে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ : আহত ১০

সোনারগাঁয়ে বিজয় দিবসে অনুষ্ঠানে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। গতকাল সোমবার সকাল ১১ টার দিকে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসে সোনারগাঁ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোঃ রেজাউল করিম ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান গ্রুপের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকসহ ১০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে সোনারগাঁয়ের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যধাপক মোঃ রেজাউল করিম ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্ধ চলছে। একারনে সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসন ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদনের জন্য উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান সমর্থকদের জন্য সকাল ৯টায় সময় নির্ধারন করে দেয়। অপরদিকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যধাপক মোঃ রেজাউল করিম সমর্থকদের জন্য সময় নির্ধারন থাকে ১০ টায়। সেই অনুজায়ী দু’পক্ষই তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রধ্যানিবেদনের জন্য উপজেলা শহীদ মিনার চত্তরে আসে। এদিকে আজহারুল ইসলাম মান্নান গ্রুপের সমর্থককরা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কিছু নেতাকর্মী সেখানেই অবস্থান করতে থাকে। এসময় অধ্যাপক রেজাউল করিম সমর্থক কর্মীরা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদনের জন্য উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে এলে আজহারুল ইসলাম মান্নানের কর্মীরা রেজাউল করিমের সমাবেশের খুব কাছে দাড়িয়ে মান্নানের সমর্থনে শ্লাগান দিতে থাকে। এসময় রেজাউল সমর্থকদের কিছু কর্মীও রেজাউলের সমর্থনে শ্লোগান দিতে শুরু করে। এসময় রেজাউল করিম সমর্থক সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক নুর-এ-ইয়াসিন নোবেল দু’পক্ষকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করতে থাকে। এক পর্যায়ে মান্নানের কর্মী মোবারক হোসেনের নেতৃত্বে কিছু উশৃংখল কর্মী সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক নুর-এ-ইয়াসিন নোবেলকে কিলঘুষি দেয় ও পিটিয়ে আহত করে। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে লাঠিসোটা ইট-পাটকেল দিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় ইটের আঘাতে রেজাউল করিম সমর্থক কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সহ উভয় পক্ষের মামুন, আব্দুল আলী, সোলায়মান, কবির হোসেন, মাসুদ মিয়াসহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা  দেয়া হয়েছে। 

আহত সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক নুর-এ-ইয়াসিন নোবেল বলেন, শান্তিপূর্নভাবে অধ্যাপক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলা পরিষদে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান তারা। তাদের দু’পক্ষকে উপজেলা প্রশাসন সময় বেঁধে দেন। তারা সংঘর্ষে জড়ানোর উদ্দেশ্যে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল। তারা স্লেগান দিয়ে এক পর্যায়ে আমাদের ওপর হামলা করে। 

সোনারগাঁয়ের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, প্রশাসন আমাদেরকে সময় বেঁেধ দিয়েছেন। আমরা আমাদের নির্দিষ্ট সময়ে ফুল দিতে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ফুল দিয়ে ফিরে আসার সময় অতর্কিতভাবে হামলা চালায় আমার নেতাকর্মীর উপর। যা খুবই দুঃখজনক।

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, রেজাউল করিমের লোকজন শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসে উষ্কানিমূলক কথা বলার কারনে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করার কারনে আমাদের লোকজন আহত হয়েছে।

সোনারগাঁ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর বলেন, প্রশাসন আমাদেরকে সকাল ১০টায় ফুল দেয়ার জন্য সময় দিয়েছিল। আমরা অপেক্ষা করে বেলা ১১টার পর ফুল দিতে যাই। কিন্তু মান্নানের লোকজন ফুল দিয়ে সেখান থেকে না গিয়ে অবস্থান করতে থাকে। পরে আমরা ফিরে আসার সময় আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, বিএনপির দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।  তিনি আরো বলেন ইটের আঘাতে দু’তিনজন আহত হয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ দিতে আসেনি। 

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ চত্বরে কোন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যে ঘটনা ঘটেছে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ বিষয়ে কোন পক্ষই অভিযোগ দেননি।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে