রাজশাহীর বাঘায় পানিবন্দি পদ্মার ১৫টি চরে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ১৫টি চরে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ এক সপ্তাহ যাবৎ পানিবন্দি রয়েছে। অধিকাংশ বাড়ির টিউবয়েল পানিতে তলিয়ে আছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, লক্ষীনগর একটি চর। এই চরে ১৫০টি পরিবার বসবাস করে। এক সপ্তাহ যাবৎ তারা পানিবন্দি হয়ে আছে। চৌমাদিয়া সরকারি প্রাইমারী স্কুল পানির নিয়ে রয়েছে। এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না।
এই স্কুলের পাশে দিয়াড়কাদিরপুর বাজার। এই বাজারের পাশে একটি টিউবয়েলের অর্ধেক পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এই টিউবয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করে সকলেই প্রাণ করছেন। প্রতিটি চরের মানুষের একই অবস্থা। চারদিকে পানি। বাড়িসহ সব জমির ফসল পানিতে ডুবে আছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের সাবেক মেম্বর আবদুর রহমান বলেন, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া ও দিয়াড়কাদিরপুরসহ চরের প্রতিটি বাড়িতে পানি উঠায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ টিউবয়েলের অর্ধেকের বেশি অংশ পানির নিচে তলিয়ে আছে। উপায় নেই, তলিয়ে থাকা টিউবয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হচ্ছে।
দিয়াড়কাদিরপুর চরের দিলরুবা খাতুন বলেন, নিজের বাড়িতে টিউবয়েল নেই। বাজারের পাশে একটি টিউবয়ের থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করে পান করি। এই টিউবয়েল অর্ধেকের বেশি অংশ ডুবে আছে। কোন উপায় নেই, এ টিউবয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছি।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার চরের প্রায় ৯০ ভাগ পরিবারের বাড়িতে পানি উঠেছে। শত শত পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। কিছু কিছু বাড়ি একেবারে ডুবে আছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিপুর, উত্তর কালিদাসখালী, দক্ষিন কালিদাসখালী, পশ্চিম চকরাজাপুর, পূর্ব চকরাজাপুর, দাদপুর, পলাশি ফতেপুর, নিচ পলাশি ফতেপুর, জোতাশী, লক্ষীনগর, কালিদাসখালী, আম বাগান, টিকটিকিপাড়াসহ ১৫টি চরে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ বসবাস করে। সবাই পানিবন্ধী রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, বুধবার (১৩ আগষ্ট) চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিরপুর, আতারপাড়া চরে পানিবন্দি ২২০টি পরিবারের মাঝে সরকারিভাবে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। তবে জলমগ্ন চরের মানুষের কিছুটা বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।