অর্থপাচার মামলা: জি কে শামীমের খালাস স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম
অর্থপাচার মামলা: জি কে শামীমের খালাস স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন

সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় অর্থপাচারের অভিযোগে আলোচিত মামলায় বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার জি কে শামীমের খালাসের রায় স্থগিত করতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছে। রোববার (১৭ আগস্ট) এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়ে জি কে শামীমকে অর্থপাচারের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস দেন। বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা খারিজ করে দেয়া হয় ওই রায়ে।

২০২৩ সালের ১৭ জুলাই ঢাকার বিশেষ আদালত-১০-এর বিচারক মো. নজরুল ইসলাম এ মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই মামলায় তার সাত দেহরক্ষীকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। তখন আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, টেন্ডারবাজ ও অর্থপাচারকারীদের কোনো আদর্শ নেই। তারা কেবল ব্যক্তিগত স্বার্থে অপরাধে জড়ায়।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনে শামীমের বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল গুলি, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও মদ জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় ২১ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন।

২০২০ সালের ৪ আগস্ট পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এর তিন মাস পর, ১০ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ আদালত-১০ মামলার বিচার শুরু করে।

সিআইডির তদন্তে উঠে আসে, জি কে শামীমের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১৮০টি এফডিআর রয়েছে, যার পরিমাণ ৩৩৭ দশমিক ৩ কোটি টাকা। রাজধানীতে ৫২ কাঠা জমি এবং দুইটি বাড়ির তথ্যও পাওয়া যায়। তদন্ত কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, সরকারি দপ্তরে টেন্ডার কারসাজি, বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজির মাধ্যমেই তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলেন।

অস্ত্র মামলায় এরই মধ্যে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। তবে আলোচিত অর্থপাচার মামলায় হাইকোর্ট থেকে খালাস পাওয়ায় নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ মনে করছে, প্রমাণিত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও খালাস দেয়া হয়েছে। এজন্য তারা উচ্চ আদালতের চেম্বার বেঞ্চে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে