অপসারণের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী

খুলনায় দুর্নীতিবাজ ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মুরাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

এফএনএস (এম এ আজিম; খুলনা) : | প্রকাশ: ৩০ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
খুলনায় দুর্নীতিবাজ ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মুরাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ খুলনার দাকোপ তিলডাঙ্গার ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১২ টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নির্যাতিত এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সরদার আবু আশরাফ। 


তিনডাঙা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গার ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন যোগদান করার পর ভূমি অফিসটি দূর্ণীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। তিনি ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। যে বেশি উৎকোচ দেয় তার পক্ষে অন্যায়ভাবে কাজ করেন। একজনের ডিসিআরের জমি অন্য জনকে দিতে নানা কৌশল গ্রহণ করেন। তার অত্যাচারে তিনডাঙা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।


এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তি কোন উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া নিজে বড় অংকের টাকার বিনিময় নিজের ইচ্ছায় জনসাধারনের মাঝে বিতরন করে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে সে বলে তার বাড়ী বটিয়াঘাটা সুরখালী ইউনিয়নে।


তবে খুলনায় থেকে মানুষ হয়েছি, কেউ কিছু করতে পারবে না। উক্ত কর্মকর্তা অর্পিত ৩০০/৬৭-৬৮ নং কেসের জমিতে পুকুর ছিল সেটি ভরাট করে দোকানের পজেশন করে দিয়েছে। ফলে এলাকার মানুষ সুপেয় পানি সংকটে ভুগছে। এছাড় ভিপি সম্পত্তির উপর পিচের রাস্তার উত্তর পার্শে মাটি ভরাট দিয়ে দোকানের পজেশন দেওয়ার জন্য মাটি ভরাট করে দিয়েছে। ভিপি সম্পত্তি পশ্চিম পার্শ্বে জনসাধারনের পানি সরবরাহের বারুইখালীর খালে পিচের রাস্তার উত্তর পার্শ্বে সরকারী খালের মধ্যে তিন জায়গার মাটি ভরাট দিয়ে দোকান পজেশন দিয়েছে। এতেকরে হাজার বিঘা জমির পানি সবরাবহ পথ বন্ধ হয়ে গিয়াছে। এ খালই একমাত্র পানি সরবরাহের পথ। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আরো বহু সরকারী সম্পত্তিতে নিজের ইচ্ছামত 


দখল দিয়ে আসছে। গত ধান্য মৌসুমে কিছু কতিপয় লোক দ্বারা উক্ত জমির ধান কর্তন করতে আসলে সেনা বাহিনীর দপ্তরে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শওকত শেখ। তার অভিযোগের প্রক্ষিতে রাজভাগের এক লাখ ২০ হাজার টাকা স্থানীয় কৃষকদের দেওয়ার কথা থাকলেও সে টাকা কৃষকদের না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করে। এমনকি নবায়ন পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করলে প্রতিবেদনে মোটা অংকের টাকা দিতে হবে বলে জানায় ওই কর্মকর্তা। তা না হলে জমি অন্য পার্টিদের দিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে। এই জমি নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে ৯৮/২৩ নং মামলা রায় থাকা স্বত্বেও নায়েব মুরাদ হোসেন এই সকল কাগজপত্র 'মানেন না। এস, এ খতিয়ান খাজনা থেকে বি,আর, এস খতিয়ানে খাজনা দিতে গেলে হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনা জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত ২৭ মার্চ খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের বরাবর লিখিত আবেদন করেন শওকত শেখ। এ অভিযোগের তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন খুলনা বিভাগীয় সিনিয়র সহকারী কমিশনার সুমাইয়া সুলতানা এ্যানি। সরদার আবু আশরাফ খুলনা শহরে বসবাস করেন। তিলভাঙ্গায় খোনা মৌজায় তার জমি, খোনা ঘরবাড়ী রয়েছে। প্রায় ৬৫ বছরের অধিককাল ধরে তিনি ভোগ দখল করে আসছেন। সরদার আবু আশরাফের খুলনা শহরে বসবাস করার সুযোগ নিয়ে সম্প্রতি তার ডি সি আরের ৬.৯০ একর জমি দখল নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে এলাকার নব্য গড়ে ওঠা ভূমিদস্যু রসুল গাজী, আব্দুর রহিম ফকির, আমিনুর মোল্যা, রশিদ মোল্লা, সনজিত বাওয়ালী, জাকির গাজী, মিঠু শেখ ও মুরাদ হোসেন গং। এঘটনায় নিরুপায় হয়ে তিনি যৌথ বাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। এছাড়া গোলাম রব্বানী সরকার খোনা মৌজায় জমি ক্রয় করে ২০ বছর ধরে ভোগ দখলে রয়েছেন। গত ২৬ আগষ্ট সকাল ৮টায় তিনি জমিতে গিয়ে দেখেন তার জমিতে প্রভাবশালী রহিম ফকির, রসুল গাজী, রশিদ মোল্লা, আমিনুর মোল্লা ও ইলিয়াস ফকিরসহ অন্যান্যরা জমিতে ধান রোপণের কাজ করছেন। তখন তিনি প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিট করার জন্য তারা তেড়ে আসে। ওই সময় জীবন বাচাঁতে সেখান থেকে চলে আসেন। এঘটনায় ওই দিন তিনি দাকোপ থানায় লিখিত অভিযোগও করেন। দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী ভূমিদস্যুেদর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শওকত শেখ, রব্বানী আব্দুল্লাহ, বাবুল সানা ও মানিক প্রমুখ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে