আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের

রংপুরে জ্বালানী তেলের সংকট

এফএনএস (মমিনুল ইসলাম রিপন; রংপুর) : | প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৮ পিএম
রংপুরে জ্বালানী তেলের সংকট

রংপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জ্বালানি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা, পদ্মা ও যমুনার ডিপোতে তেলের মজুদ শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। তেল না থাকায়  বিপাকে পড়েছেন ফিলিং স্টেশনের মালিকরা ।  কোন কোন ফিলিং স্টেশন বাঘাবাড়ি এবং পার্বতিপুর থেকে তেল এনে তাদের ফিলিং স্টেশন চালু রাখার চেষ্টা করছেন। এতে তাদের খরচ লাগছে অনেক বেশি। চট্টগ্রাম থেকে রেলে তেল সরবরাহ কমে যাওয়ায় এমনটা হয়েছে। আগে রেল পথে  মাসে ৮/৯ র‌্যাক আসত। প্রতিটি র‌্যাকে ২৭টি ওয়াগান থাকতো। বর্তমানে প্রতিমাসে এক থেকে দুটি র‌্যাক আসে। এই অবস্থা গত ৬ মাস ধরে চলে আসলেও রেল বর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেনা।  

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিষ্টিবিউটরস এজেন্ট এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসাসিয়েশন্স সূত্রে  জানাগেছে জ্বালানী তেল সরবরাহকারী বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের রংপুর রেলহেড ডিপোতে তেল সরবরাহ না থাকায় তেল সংকটে পড়েছে রংপুর  বিভাগের অন্তত পাঁচ জেলা। এতে গত কয়েক মাস ধরে এ ডিপোর অধীন পেট্রোল পাম্প মালিক ও এজেন্টদের চাহিদা মতো তেল সরবরাহ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে এ অঞ্চলে জ্বালানি তেলের  সংকট দেখা দিয়েছে।

রংপুরে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানী তেল সরবরাহের জন্য চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিষ্টিবিউটরস এজেন্ট এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসাসিয়েশন্স, রংপুর জেলার পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর একটি আবেদন দিলেও কোন কাজ হয়নি। 

এছাড়া গত ১৪ আগস্ট  রংপুর ডিপোতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানী তেল সরবরাহের দাবিতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিষ্টিবিউটরস এজেন্ট এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসাসিয়েশন্স, রংপুর জেলার পক্ষ থেকে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরেও একটি পত্র প্রদান করেন। ততেও কোন কাজ হয়নি। 

পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিষ্টিবিউটরস এজেন্ট এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসাসিয়েশন্স এর পত্রে উল্লেখ করা হয়, রংপুর ডিপো থেকে বিভাগের ৫টি জেলা রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা এবং নীলফামারী জেলায় জ্বালানী তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে চট্টগ্রাম থেকে রেল পথে নিয়মিত তেল না আসার ফলে ডিলার ডিষ্টিবিউটরদের চাহিদা মতো তেল সরবরাহ হচ্ছে না। যার ফলে জ্বালানী সংকট তৈরি হয়েছে।  রংপুরে জ্বালানী তেল সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে খাধ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। 

একাধিক পাম্প মালিক জানান, রংপুর ডিপোতে জ্বালানী তেল না থাকায় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে পার্বতীপুর এবং বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে জ্বালানী তেল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তবে এতে পরিবহন বাবদ দ্বিগুণ খরচ গুনতে হচ্ছে। এছাড়া সিরিয়াল পাওয়ার জটিলতাসহ জ্বালানি তেল নিয়ে ফিরে আসতে দুই দিনের বেশি সময় লাগছে। 

জানাগেছে, রংপুরের তিনটি জ্বালানী ডিপোতে মাসে অন্তত আড়াই কোটি লিটার তেলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম থেকে তেল সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ২১ লাখ লিটার। যা দিয়ে ২ দিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপো সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকটের কারণে তেল পরিবহণ করতে পারছে না। রেলের ইঞ্জিন সংকটে জ্বালানি তেল পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। কবে নাগাদ জ্বালানি তেল আসবে  তা বলা যাচ্ছে না।

রংপুর বিভাগীয় দাহ্য পদার্থ বহনকারী ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউল মিয়া লাল্লু বলেন, রংপুরে তেল না আসায় প্রায় ছয়শত শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পরেছে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। রংপুরে নিয়মিত জ্বালানী তেল সরবরাহ করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিষ্টিবিউটরস এজেন্ট এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসাসিয়েশন্স, রংপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আজিজুর ইসলাম মিন্টু বলেন. চট্টগ্রাম থেকে  রেল পথে থেল আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেচে।  ফলে অংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।  এই অব্স্থায় গ্রাহক পর্যায়ে তেল সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।  পরিস্থিতি উত্তরণে দুই একদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন  করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ফিলিং স্টেশনের মালিক মঞ্জুর আজাদ বলেন রংপুরের ডিপোতে তেল  সংকট। বাঘাবাড়ি- পার্বতিপুর থেকে তেল এনে ফিলিং স্টেশন চালু রাখা হয়েছে।  এতে পরিবহণ খরচ বেশি পড়ছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে