বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান হিন্দু সম্প্রদায়কে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে উৎসব নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের প্রতি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার দেওয়া একটি বিবৃতি এমন তথ্য জানিয়েছেন জামায়াত আমির ড. শফিকুর রহমান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল পর্ব শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ বরাবরই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছে। এমন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নজির তামাম দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল। বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন অনন্য পরিবেশের জন্য নানা সময়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছে। তারা বাংলাদেশকে একটি ‘মডারেট মুসলিম কান্ট্রি’ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ‘রোল মডেল’ হিসেবে অভিহিত করেছে।”
তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে মুগ্ধ হয়ে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার এইচ ই গ্রে উইল কুক বলেছিলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। পূজা ও ঈদ একই সময়ে পালনে এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের মানুষকে যেভাবে সহযোগিতা করে, তা দেখে আমরা মুগ্ধ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশনপ্রধান উইলিয়াম হানা বলেছিলেন, “বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উন্নত মডেল। এ দেশে সব বিশ্বাস ও ধর্মের মানুষ শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে পাশাপাশি বসবাস করছে এবং নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে আসছে।” সবার অংশগ্রহণ ও উপস্থিতিতে বাংলাদেশের ধর্মীয় উৎসবগুলো পরিণত হয় সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলায়, যা সারা দুনিয়ায় জাতি হিসেবে আমাদের নিয়ে গেছে উচ্চমাত্রায়।”
‘শারদীয় দুর্গোৎসব আমাদের জাতীয় জীবনে সহনশীলতা ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করুক। আমি হিন্দু সম্প্রদায়সহ বাংলাদেশের সকল জাতিগোষ্ঠীর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। পারস্পরিক ভালোবাসা, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রাখতে হবে’-উল্লেখ করেন জামায়াত আমির।
শফিকুর রহমান আরও যোগ করে বলেন, “অতীতের মতো এবারও যেন হিন্দু সম্প্রদায় তাদের শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারে সে জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে শারদীয় ধর্মীয় উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের জনশক্তি এবং শান্তিপ্রিয় দেশবাসীর নিকট উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”