আড়াই লাখ পশুর জন্য টিকা ১৩ হাজার

সুন্দরগঞ্জে গরু-ছাগলের মাঝে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রার্দুভাব

এফএনএস (মোঃ ইমদাদুল হক; সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা) : | প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম
সুন্দরগঞ্জে গরু-ছাগলের মাঝে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রার্দুভাব

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গত এক মাস থেকে গরু-ছাগলের মাঝে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। দিন দিন এর প্রকোপ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলার পনের ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় খোজঁ নিয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক গরু-ছাগল অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। সেই সাথে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গরু-ছালগ পরিচর্যা করায় অন্তত ৫ হতে ৬ জন পশু মালিক আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে পশুর  মৃত্যুর সংখ্যা কম। 

উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন হতে প্বার্শবর্তী পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দেয়ায়, তার প্রভাব এখন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তানদী বেষ্ঠিত এলাকা বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর , বেলকা, পৌরসভা এলাকায় অ্যানথ্রাক্সের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গা, তারাপুর ও পৌরসভায় অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলায় গরু-ছাগলের সংখ্যা আডাই লাখ। টিকা রয়েছে মাত্র ১৩ হাজার। টিকার  জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু গরু-ছাগলের সঠিক সংখ্যা দিতে পারেনি উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর। তাদের তথ্য মতে ১০ হতে ১৫টি গরু-ছাগল হতে পারে।

পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আলুটারী মহল্লার মো. আব্দুল মতিন মিয়া বলেন, হঠাৎ গত ধুধবার তার দুইটি গরু অজ্ঞত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে ওইদিন রাতে একটি গরু মারা যায়। পরে প্রাণি সম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন এসে চিকিৎসা দিয়ে যায়। একদিন পর ওই গরুটিও মারা যায়। পরবর্তীতে বাকী গরু-ছাগলের মাঝে অ্যানথ্রাক্স টিকা দেয়ায় বর্তমানে সুস্থ রয়েছে।

সর্বান্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামের ফরমান আলী বলেন, তার তিনটি গরু অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হলে প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি গরু মারা গেছে, বাকীগুলো সুস্থ রয়েছে। ওই গ্রামে টিকা প্রদান করায় এখন আক্রান্তের সংখ্য কমে গেছে।

উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, পাশ্ববর্তী পীরগাছা উপজেলা হতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় সুন্দরগঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকাপ দেখা দিয়েছে। পৌরসভায় দুইটি গরু মারা গেছে। সাহাবাজ এলাকায় অ্যানথ্রাক্সের প্রার্দুভাব দেখা দেয়ায় ওই এলাকায় ইতোমধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে। আমাদের মাঝে ১৩ হাজার টিকা রয়েছে। আমরা আরও চাহিদা পাঠিয়েছি। টিকা পেলে গরু-ছাগলের মাঝে প্রদান করা হবে। রোগাক্রান্ত গরু-ছাগলের মাংস খেলে মানুষ আক্রান্ত হবে না। তবে আক্রান্ত পশু পরিচর্যা করলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দিবাকর বসাক বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে উপজেলার বেলকা, সর্বান্দ ইউনিয়ন হতে ৪ হতে ৫ জন  অজ্ঞত বা অ্যানথ্রাক রোগে আক্রান্ত রোগি এসেছিল। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গরু-ছাগল পরিচর্যা করলে মানুষের মাঝে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে