বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা তাদের চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি ও প্রজ্ঞাপন জারির পর শিক্ষক নেতারা এ ঘোষণা দেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। আমরা আগামীকাল থেকেই শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাব।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী নভেম্বর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের সাড়ে ৭ শতাংশ (৭.৫ শতাংশ) বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন। আগামী বাজেট থেকে এই হার ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। তবে চিকিৎসা ভাতা (১ হাজার ৫০০ টাকা) এবং উৎসব ভাতা (মূল বেতনের ৫০ শতাংশ) অপরিবর্তিত থাকবে।
অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “সরকার আমাদের দাবি শুনেছে, আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং বদলি প্রক্রিয়া চালুর বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় রোববার (১৯ অক্টোবর) এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান। তাদের দাবির মুখে মন্ত্রণালয় নতুন করে বাড়ি ভাতার হার সমন্বয় করে ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পর মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের নেতাদের হাতে প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি তুলে দেন। তিনি বলেন, “বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য এটি একটি বাস্তবসম্মত অগ্রগতি। সীমিত অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্যেও আমরা তাদের ন্যায্য দাবির পক্ষে আছি।”
দীর্ঘ ১০ দিনের এই আন্দোলনে শিক্ষকরা রাজধানীর শহীদ মিনারে অবস্থান, অনশন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনের সময় বিএনপি, জামায়াত ও ন্যাশনাল কেয়ারটেকার পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে মাসে ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন, যা পরে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়। ১৬ অক্টোবর মূল বেতনের ৫ শতাংশ নির্ধারণের পরও তারা আন্দোলন চালিয়ে যান। অবশেষে তৃতীয় দফায় নতুন প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে আন্দোলনের অবসান ঘটল।