বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পুরনো ধাঁচের অর্থনীতি পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক অর্থনীতি নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ অনুরোধ জানান। সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘জোর করে, আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল।
এখানে ঐক্যমতের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ ঐক্যমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐক্যমত্য যতটুকু হবে সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।’ খসরু বলেন, ‘ঐক্যমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐক্যমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐক্যমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐক্যমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।’ দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘ঐক্যমত্য কমিশনে যারা আছেন, আপনাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান।
বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যে সমস্ত দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। তার মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। আর ঐক্যমত্যে যারা তাদের মতামত বাংলাদেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়, এই দায়িত্ব তাদের কেউ দেয় নাই।’
নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।’ রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।