লাগামহীন হয়ে পড়েছে দেশের ওষুধের বাজার। ক্রমাগত বেড়েই চলছে জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধের দাম। গত ১ বছরে প্রায় হাজার প্রকারের ওষুধের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। কোন কোন ঔষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশী। বিশ্ববাজারে ওষুধের কাচা মালের দাম বৃদ্ধি এবং ডলারের দাম বাড়ার অজুহাতে কোম্পানিগুলো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়িয়ে দিচ্ছে ওষুধের দাম। কিন্তু এভাবে ওষুধের দাম বাড়লেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পর্যবেক্ষণ ও পদক্ষেপ নেই। এমনকি ওষুধের মূল্য নির্ধারণী কমিটির সভাও হচ্ছে নিয়মিত। পাশাপাশি গড়িমসি চলছে অত্যাবশ্যকীয় ২০৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ নিয়েও। এভাবে দফায় দফায় ওষুধের দাম বাড়ার কারণে ভোগান্তিতে ভুগছে সাধারণ মানুষ। তারপরও ওষুধ শিল্প সমিতির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এদেশে ওষুধের দাম এখনও অনেক কম। আরো আগেই ওষুধের দাম বাড়ানো উচিত ছিল বলে তাদের মতামত। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আমদানীকৃত এবং দেশে উৎপাদিত সবধরনের ওষুধের দামই কমপক্ষে শতকরা ৩০ ভাগ বেড়েছে। আরো দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওষুধের অতিরিক্ত দাম বাড়ার কারণে ওষুধ ব্যবসায়ির সাথে ক্রেতারা জড়িয়ে পড়ছে দাম নিয়ে বাক-বিতন্ডায়। এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন ওষুধ দোকানদার জানায়, প্রতিদিন বেশী দামে ওষুধ কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। যার কারণে ক্রেতার অভাব হচ্ছে।
তারা বিশ্বাস করতে পারছে না ওষুধের দাম এতো বেশী হয়েছে। ফলে দোকানদার ও ক্রেতাদের মধ্যে ঘটছে বাক-বিতন্ডা। দোকানদাররা আরো জানায়, ওষুধ কোম্পানিগুলো কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যেভাবে দেশে ওষুধের দাম বাড়ছে তাতে সাধারণ মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ রাষ্ট্রয়াত্ত সংস্থা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ১৯৯৪ সাল থেকে হাতেগোনা ১১৭টি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এর মধ্যে বর্তমানে অনেক ওষুধই এখন আর কোম্পানিগুলো উৎপাদন করছে না। এ ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসনের কোন প্রকার ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তবে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের একটি তালিকা করা হয়েছিল। তাতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের তালিকায় ২০৯টি আইটেম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এসব ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হয়নি। এক্ষেত্রে ওষুধের মূল্য নির্ধারণী কমিটি জেনে শুনেই কোম্পানিগুলোকে ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এর ফলে লাগামহীন হয়ে পড়েছে ওষুধ বাজার।
বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সৈয়দপুর জেলা শাখার নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য আতাহার হোসেন বাদশা বলেন,ওষুধের দাম এমনভাবে বেড়েছে যা আমরাও অবাক হয়েছি।
এভাবে ওষুধের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ কিভাবে ওষুধ ক্রয় করবে। কোন কোন ওষুধের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। হাতে গোনা কয়েকটি ওষুধ বাদে প্রায় সকল প্রকার ওষুধের দাম বেড়েছে তিনগুন থেকে দশগুন পর্যন্ত।