চলতি আমন মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তরের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জেলার ছয় উপজেলার ৯টি খাদ্য গুদামে এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।ধান-চাল সংগ্রহের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, নির্ধারিত ৪ মাস সময়ের মাত্র দেড় মাস শেষ হয়েছে। সামনে এখনো আড়াই মাস বাকি রয়েছে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে খোলাবাজারে দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। চলতি আমন মৌসুমে ৬ উপজেলায় ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৪৮৫ মেট্রিক টন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, আমন মৌসুমে এবার সরকারি ভাবে ৭ হাজার ৯২৬ মেট্রিক টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। চলতি বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে। তবে এ কয়দিনের মধ্যে এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। এ সময়ে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন হয়েছিল ৯ হাজার ১৪৫ মেট্রিক টন। এসব চালের মধ্যে মিলারদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ছয় হাজার ৯৯৮ মেট্রিক টন।এছাড়া আতপ চাল লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬৫২ মেট্রিক টন, মিলারদের সঙ্গে চুক্তি ৪৯১ মেট্রিক টন। সংগ্রহ হয়েছে ৮৫ মেট্রিক টন। উপজেলার কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহের সময় আদ্রতা ১৪ শতাংশের নিচে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকে। আদ্রতার এ বাধ্যবাধকতা হাটবাজার বা আড়ত গুলোতে বিক্রির ক্ষেত্রে নেই। খোলা বাজারের ব্যবসায়ীরা অনেক সময় বাড়ি থেকে ধান ওজন করে নিয়ে যান। হাটবাজার বা আড়তে ধান বিক্রি করলে নগদ টাকা পাওয়া যায়। সরকারি গুদামে বিক্রির পর টাকা পেতে অনেক সময় লেগে যায়। এছাড়া সরকার ধানের মন প্রতি দাম ধরেছে এক হাজার ৩২০ টাকা। আর হাটবাজার বা আড়তে ধান বিক্রি করলে মন প্রতি পাচ্ছি ১৩৫০ থেকে ১৪০০ টাকা করে। এসব কারণে অনেক কৃষক খাদ্যগুদামে ধান বিক্রির আগ্রহ হারিয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রিয় কলম চাকমা বলেন, সরকার ধানের প্রতিমন দাম নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ৩২০ টাকা। খোলা বাজারে মনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে বেশি দামে। যার ফলে কৃষকেরা হাটবাজারে তাদের ধান বিক্রি করছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের কোনো সম্ভাবনাই দেখছি না।মিলাদের কাছ থেকে চাউলের যে চুক্তি রয়েছে তারা আস্তে আস্তে দিচ্ছেন আশা করি তারা সময়ের মধ্যে সব চাউল দিয়ে দেবেন। আর যেসব মিলারা সময়ের মধ্যে চাউল দিতে পারবেন না তাদের বিরুদ্ধে মেয়াদ শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।