ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার বা এনইআইআর বাস্তবায়ন নিয়ে ক্ষোভ জানাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। রোববার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকে দোকান বন্ধ রেখে বিভিন্ন শপিং মল ও মার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী এবং ডিস্ট্রিবিউটররা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এনইআইআর সংস্কার, একচেটিয়া সিন্ডিকেট প্রথা বন্ধ এবং মোবাইল ফোনের উন্মুক্ত আমদানির সুযোগ তৈরির দাবিতে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন।
কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারার আশপাশে সকাল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ধানমণ্ডিসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা যোগ দেন মানববন্ধনে। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্লে-কার্ড ও ব্যানার। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে লাখো পরিবারের জীবিকা, আর লাভবান হবে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। তারা বলেন, বাড়তি কর এবং নিবন্ধন নীতির কারণে মোবাইল ফোনের দাম বাড়বে, ব্যবসা কমে যাবে এবং বাজারে অসন্তুলন তৈরি হবে।
মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের নেতারা জানান, এনইআইআর চালুর আগে ব্যবসায়ীদের মতামত নেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, করনীতিতে ভারসাম্য আনা এবং মোবাইল প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। এক ব্যবসায়ী বলেন, “গ্রে মার্কেটে অন্তত পঁচিশ হাজার মানুষ কাজ করেন। হঠাৎ করে এই ব্যবসা বন্ধ হলে তারা কোথায় যাবে। আমরা কর দিতে আপত্তি করি না, তবে ন্যায্য করনীতি চাই।”
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা জানান, এনইআইআর বাস্তবায়নের সময়সীমা ও শর্ত পুনর্বিবেচনা করা জরুরি। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বরের পর নেটওয়ার্কে চালু হওয়া আনঅফিসিয়াল মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে তার আগ পর্যন্ত যেসব ফোন নেটওয়ার্কে সক্রিয় থাকবে, সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে।
এনইআইআর সম্পর্কিত সরকারি দিকনির্দেশনা অনুযায়ী, মোবাইল ফোন বৈধ কি না যাচাই করা যাবে ১৬১৬১# নম্বরে বা বিটিআরসির ওয়েবসাইটে আইএমইআই নম্বর দিয়ে। বিদেশ থেকে আনা ফোন নিবন্ধনের জন্য গ্রাহককে এনইআইআর পোর্টালে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিতে হবে। এছাড়া নিবন্ধিত ফোন বিক্রি বা হস্তান্তর করতে চাইলে ডি-রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, যা সিটিজেন পোর্টাল, এমএনও পোর্টাল, অ্যাপ বা ইউএসএসডি কোডের মাধ্যমে করা যাবে।
কারওয়ান বাজারে চলমান মানববন্ধনের ফলে আশপাশের সড়কে যান চলাচল কিছুটা ধীরগতির হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।