গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ নয় প্রতীকের পদপ্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নানের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গণসংযোগ শেষে টোক ইউনিয়নের বীর উজলী গ্রামে নির্বাচনী কর্মীসভা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর রোববার বিকালে উপজেলার টোক ইউনিয়নের স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত নারী পুরুষদের নিয়ে এক বিশাল নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দলের চেয়ারপার্সন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আপোষহীন নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ''তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি শীর্ষক" কর্মশালায় বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ সক্রিয় কর্মীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেম্বার মোঃ আব্দুল বাতেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ জহিরুল ইসলাম মাষ্টারের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন টোক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবু সাঈদ মাহমুদুল হক বুলবুল, সহ-সভাপতি বাসির উদ্দিন বাসু, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান সবুর, ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি শামিমা নাসরিন প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য ও কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন সহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার কর্মপরিকল্পনায় অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় অন্যান্যের মাঝে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, ওলামা দল ও মহিলা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইউনিয়ন ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ মোস্তফা কামাল এবং শেষে দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা ও মৃত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোঃ মফিজ উদ্দিন। পরে আগত অতিথিদের মাঝে তবারক বিতরণ করেন। অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সমবেত নারী-পুরুষের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকের পদপ্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নান কাপাসিয়ার সার্বিক উন্নয়নে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক বিজয়ী হলে সহনশীল রাজনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। তাই কাপাসিয়াকে এগিয়ে নিতে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে উন্নয়নের অংশীদার হতে তিনি আহ্বান জানান। যুবসমাজকে বাঁচাতে মাদকমুক্ত সুস্থ সমাজ গঠনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিতে হবে। মাদকের ছোবলে যুবসমাজ আজ দিশেহারা। মাদকের করাল গ্রাসে যুব সমাজ ধ্বংসের পথে। নির্বাচিত হলে কাপাসিয়া থেকে মাদকের মুলউৎপাটন করা হবে বলে ঘোষণা দেন। প্রত্যেকে একজন কর্মী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চাইবেন। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ দলমতের উর্ধ্বে উঠে সবাইকে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচনে ভূমিকা রাখবেন। ধানের শীষ প্রতীক কাপাসিয়ার সার্বিক উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। কাপাসিয়ার উন্নয়নে বিগত দিনে এই এলাকার যারা অবদান রেখেছেন তাদের আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানকারী এলাকার কৃতিসন্তান তাজউদ্দীন আহমদের নাম তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। কাপাসিয়ার উন্নয়নে আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রাণপণ চেষ্টা ছিল। বংশ পরম্পরায় কাপাসিয়ার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছেন। আগামী দিনে বিএনপি নির্বাচিত হলে আপনাদের সাথে নিয়ে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। দায়িত্বশীল হয়ে অসমাপ্ত উন্নয়নমূলক কাজ হচহহগুসলো শেষ করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই সবাইকে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাপাসিয়াকে এগিয়ে২ নেয়ার অনুরোধ করছি। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় এ এলাকার কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি। যারাই কাজ করতে চেয়েছিল, তাদের কাজে বাধা দিয়ে সাইনবোর্ড পানিতে ফেলে দিয়েছে। তারা এখন এলাকা ছাড়া হয়েছে। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিগত দিনের মতো এই এলাকার অবহেলিত রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, স্কুল, কলেজ সহ ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। তিনি আরো বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মা-বোনরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। একটি ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরিহ মা-বোনদের বিভ্রান্ত করছে। তারা একটি ফরম ধরিয়ে দিয়ে বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে। কর্মজীবী নারীদের কর্মঘন্টা কমিয়ে দেয়ার নামে তাদের সাথে প্রতারণা করছে। এতে তারা কর্মশূণ্য হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তারা ঘরবন্দি হয়ে পড়বে। তারা সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম পালনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমান মা-বোনদের জান্নাত পাইয়ে দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। অথচ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম ১০ জন সাহাবীর জান্নাতের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বিএনপি দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। তাই বিএনপি সাধারণ মানুষের ভোটের দাবি রাখেন। পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা দীর্ঘ ১৭ বছর আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেতে দেয়নি। বিনা ভোটের সরকার দাবিদার বিগত দিনে এলাকার কোন উন্নয়ন করেনি। বাক স্বাধীনতা হরণ সহ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। ১৯৭১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘোষণায় প্রথমবার দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাবার মধ্যদিয়ে দেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয়েছে। আমার পিতা মরহুম ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহের প্রতি এলাকার আপামর জনসাধারণের অগাধ আস্থা বিশ্বাস ছিলো। আপনাদের সাথে নিয়েই 'ফকির মজনু শাহ্ সেতু' সহ এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছিল। জীবদ্দশায় তিনি সকল কাজ করে যেতে পারেন নি। তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে অসমাপ্ত উন্নয়নমূলক কাজ গুলো সমাধান করবো ইনশাআল্লাহ। আমাদের দলীয় নেতা কর্মীদের উপর দীর্ঘ ১৭ বছর হামলা, মামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলনে বিএনপিই নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন। তা বাস্তবায়ন হলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। হান্নান শাহ পরিবার বংশ পরম্পরায় কাপাসিয়ার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ভবিষ্যতে যেকোনো পরিস্থিতিতে কাপাসিয়ার সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের আন্তরিক ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। দল সরকার গঠন করলে কাপাসিয়ায় পরিবেশবান্ধব কলকারখানা স্থাপন, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, মাদকমুক্ত সমাজ গঠন এবং মা-বোনদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। মহিলাদের বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার সংখ্যা বাড়ানো, এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবে। বড় বড় ব্যবসা কেন্দ্রের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ছোটখাটো পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে সাবলম্বী হতে পারবেন। তাতে জায়গা জমির দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষের শিক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা হবে। আগামী নির্বাচনে দলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থেকে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়া উপস্থিত মা-বোনদের প্রশ্নের উত্তরে শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দল সরকার গঠন করলে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন। বেকার যুবকের বেকারত্ব দূর, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিজয়ের মাসে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয় এবং শাহ রিয়াজুল হান্নান এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদর্শন ও নিজ হাতে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।