ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আহমেদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বীরবখুরা গ্রামে সোমবার বিকালে পুলিশ আসামি ধরতে গেলে তাদের উপস্থিতিতে দুর্বৃত্তরা হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে বলে কাউসারের পরিবার অভিযোগ করেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ঘরে ফ্রিজ, টিভি, সুকেস, চেয়ার, তালাবাসন ভাংচুর করে। আলমারীতে থাকা ২১ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ প্রায় ৭০ হাজার টাকা ও একটি মোটর সাইকেল লুট করা হয়।
যুবলীগ নেতার বাবা হোসেন মড়ল বলেন, সোমবার বিকেলে পুলিশের পোশাকে ৩টি মোটর সাইকেল এবং সাদা পোশাকে ৩টি মোটর সাইকেলে করে ১০-১৫জন বাড়িতে ঢুকে সামনের গেট লাগিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে কাউসারকে খোঁজ করে। তাকে না পেয়ে ঘরে প্রবেশ করে ফ্রিজ, টিভি, সুকেস, চেয়ারসহ মূল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ সময় আলমিরাতে থাকা ২১ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ প্রায় ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
যুবলীগ নেতা কাউসারের স্ত্রী রোজিনা আক্তার বলেন, আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা। আমাদের পারিবারিক ভাবে এলাকাতে একটা সুনাম রয়েছে। কিন্তু পুলিশ আসামি ধরার নামে আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে মহিলাদের অশালীন ভাবে গালিগালাজ করে। বেড রুমে প্রবেশ ফ্রিজ, টিভি, সুকেস, চেয়ারসহ মূল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর করে। আমার ছয় বছরের ছেলেকেও মারধর করে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এ ছাড়া ঘরের আলমিরা থেকে স্বার্ণালংকার, নগদ টাকা লুট করে। যাওয়ার সময় আমার স্বামীর ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিও নিয়ে যায় তারা।
স্থানীয় পত্যক্ষদর্শী রাসেল ও সুমন হোসেন বলেন, পুলিশ কারো বাড়িতে আসামি ধরতে আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আসামি ধরার নামে দুর্বৃত্তদের সাথে নিয়ে বাড়ির বেড রুমে প্রবেশ করে মহিলাদের গালিগালাজ করা, ভাংচুর ও লুটপাট করা এটা কোন ধরনের আইন।
গফরগাঁও থানার ওসি আবদুল আহাদ খান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদে বালু মহালের ইজারা নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় কাউসারের বাড়িতে পুলিশ আসামি ধরতে গিয়ে ছিল। কিন্তু সেখানে কে বা কারা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমার জানা নেই।
গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, বীরবখুরা গ্রামে সোমবার বিকালে পুলিশ আসামি ধরতে গিয়েছিল। সেখানে পুলিশ কোনো হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়নি। তবে কাউসারের পরিবার হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ করেছে। আর গত রবিবারের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র নদে বালু মহালের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজমুন আহমেদ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সানিল গ্রুপের সাথে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আহমেদের সাথে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনার জেরে গত রবিবার রাতে তাজমুন, সানিল গ্রুপের সাথে কাউসার গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের অন্তত পাঁচ জন আহত হয়।