বাকেরগঞ্জের কলসকাঠিতে মুসলমান সম্প্রদায়ের জমি দখল করে একটি ব্যক্তিগত মন্দির নির্মাণ করার অপচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জমির মালিক মোহাম্মদ হাতেম হাওলাদার পুলিশের ডিআইজি, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের জেএল ৬৩নং কলসকাঠী মৌজায়, দাগ নং-১৭৩৪, খতিয়ান নং-৯৬৪ এ ৭ শতাংশ জমি ক্রয়সুত্রে মালিক হাতেম আলী হাওলাদার। ওই জমি ক্রয় করার পর থেকে তিনি ওই জমিতে দোতলা একটি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। ওই জমির পাশেই উপজেলা ভূমি অফিসের সরকারি বিপি সম্পত্তি রয়েছে। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোকজন সেই বিপি সম্পত্তিতে একটি কাঠের মন্দির নির্মাণ করে বছরে একবার শুধুমাত্র জগদ্ধাত্রী পূজা উদযাপন করে আসছেন। গত কিছুদিন পূর্বে মন্দির কমিটি উপজেলা ভূমি অফিসের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই বিপি সম্পত্তি ও পাশের হাতেম হাওলাদারের ব্যক্তিগত জমির কিছু অংশ দখল করে মন্দিরের পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে। হাতেম আলী হাওলাদার অভিযোগ করেন, মন্দির কমিটি সরকারি ভিপি সম্পত্তিতে থাকা তাদের নির্ধারিত কাঠের ঘরের বাহিরে পশ্চিম দিকে তার ব্যক্তিগত জমিও জবর-দখল করে মন্দির নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক ব্যক্তি জানান, ওই মন্দিরটি সার্বজনীন দূর্গা মন্দির নয়। শুধুমাত্র বছরে একবার ওই মন্দিরে জগদ্ধাত্রী পূজা উদযাপিত হয়ে থাকে। বৃদ্ধ হাতেম হাওলাদার সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন, তিনি সরকারি বিপি সম্পত্তি বাদ দিয়ে তার ব্যক্তিগত জমি বুজে নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর আবেদন করলে গত শুক্রবার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ আক্তারুজ্জামান সরেজমিনে ঘটনাস্থলে এসে জমি মেপে তার জমি বুঝিয়ে দেয়। জমি মাপার সময় ওই দিন ঘটনাস্থলে থানার সেকেন্ড কর্মকর্তা এস আই কমল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা খোকন দাস, দৈনিক দক্ষিণের কাগজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম সালাউদ্দিন সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মন্দির কমিটির লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু কুচক্রী মহল পরদিন শনিবার রাতে মন্দিরের পাশে আলাদা রুমের মধ্যে একটি কাঠের ঘর নির্মাণ করে সেই ঘরে একটি কালী মূর্তি রেখে দেয়। বৃদ্ধ হাতেম হাওলাদার বলেন, যেহেতু তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন। তাই সম্প্রদায়ের কয়েক ব্যক্তি তার জমি দখল করে মন্দির নির্মাণ করার অপচেষ্টা করেই ক্ষান্ত হয়নি, উল্টো রাতের আঁধারে মন্দিরের মধ্যে একটি কালি মূর্তি রেখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করছেন। এদিকে রবিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়ে ওসি ফয়েজ আহমেদ মৃধা জমি যতদিন না মাপামাপি হয় ততদিন পর্যন্ত মন্দিরে সিসিটিভি স্থাপন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মন্দির কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। গত তিনদিন অতিবাহিত হলেও মন্দির কমিটি ওসি তদন্ত ফয়েজ আহমেদ মৃধা নির্দেশমত মন্দিরে কোন সিসি টিভি স্থাপন করেননি। অথচ সোমবার রাতেই হাতেম হাওলাদার তার বসত বাড়ির পিছনে একটি সিসিটিভি স্থাপন করেছেন। এলাকাবাসী অতি দ্রুত সহকারি কমিশনার ভূমি ও থানা পুলিশের মাধ্যমে হাতেম হাওলাদারের ব্যক্তিগত রেকর্ডিয় জমি মেপে বুঝিয়ে দিয়ে কুচক্রী মহলের সাম্প্রদায়িক বিনষ্টের অপচেষ্টা রুখে দেয়ার দাবি জানান।