ফেনির নুসরাত হত্যার এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার পরও শুধু এপ্রিল মাসের ২৫ দিনে ফরিদপুরে পরপর দুই শিশু ও দুই কিশোরীসহ চারজনকে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ফরিদপুরের নারী নেত্রীরা। তবে পুলিশ বলছে প্রত্যেকটি ঘটনায় অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
বিভিন্ন থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল সালথা উপজেলায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের পর ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার তিনদিন পর ৮ এপ্রিল শহরের অম্বিকাপুরে ৫ বছরের শিশু ধর্ষনের শিকার হন। ১৪ এপ্রিল নগরকান্দায় মাদ্রসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণ চেষ্টার পর গতকাল ৩০ এপ্রিল রাতে ফের ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ৬ বছরের এক শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এই সকল ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামের আনন্দ মোহনের বিরুদ্ধে এই ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। শিশুটি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী বলে জানাগেছে।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানাগেছে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রতিবেশি আনন্দ ওই শিশুটিকে আম ও টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর এলাকার একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে তাকে ধর্ষন করে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করেন।
বোয়ালমারী থানার ওসি তদন্ত শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভিকটিমের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে এই বিষয়ের সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। থানায় ধর্ষণ মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আসামীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এদিকে প্রভাবশালী একটি মহলের বিরুদ্ধে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টারও অভিযোগ উঠেছে।
এসকল ঘটনার বিষয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস (ব্লাষ্টের) ফরিদপুরের সম্বনয়ক নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট শিপ্রা গে¦াসামী বলেন, বিষয়টি সমাজের জন্য আশংকাজনক। এসব ন্যাক্কার জনক ঘটনার ক্ষেত্রে দ্রুত তদন্ত ও দ্রুত বিচারের রায় কার্যকারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক সচেতনা সৃষ্টি করতে হবে।
নারী নেত্রী আসমা আক্তার মুক্তা বলেন, পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা না থাকার কারনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন বিচারের দীর্ঘ সূত্রতার কারনে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। দৃষ্টান্ত স্থাপনের এখনই গুরুত্বপূর্ন সময়। শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এমন সামাজিক অবক্ষয় থেকে বের হওয়া মুশকিল।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এফএম মহিউদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, অপরাধ বেড়েছে সত্য, তবে পুলিশ থেমে নেই, প্রত্যেক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, এই ধরনের অপরাধী যেই হোক তাকে কোনো ছাড় নয়।