প্রশাসনের এক কর্তা ব্যক্তির রোষানলে স্ত্রী ও সন্তানকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং পুলিশের হয়রানীর মুখে দীর্ঘ ১৬দিন পর্যন্ত পালিয়ে বেড়াচ্ছেন জেলার মুলাদী উপজেলা প্রশাসনের অনিয়মিত কর্মচারী বেলাল হোসেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি (বেলাল) মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন-সঠিক বিচার না পেলে তিনি স্ব-পরিবারে আত্মহত্যা করবেন।
নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়ানো তথ্য ও যোগাযোগ অধিদপ্তরের ইনফো সরকার-২ প্রকল্পে মুলাদী উপজেলা টেকনিশিয়ান (অনিয়মিত কর্মচারী) বেলাল হোসেন বলেন, গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন ফোন করে আমাকে তার অফিসে ডাকেন। আমি অফিসে এসে দেখতে পাই ইউএনও, থানার ওসিসহ একদল পুলিশ অফিসে বসে আছেন। আমি অফিসে প্রবেশের সাথে সাথে ইউএনও স্যার আমাকে বলেন, আপনি অফিসের প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে জানায় আমি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাত করেছি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর কাছে ইউএনও জানায় আমি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছি।
বেলাল আরও জানান, মুলাদী থানার ওসি আমাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে হুমকি দিয়ে বলেন-আমি ইউএনও’র চাহিদা অনুযায়ী টাকা জমা না দিলে আমাকে একাধিক পেন্ডিং মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে। ওইসব মামলায় আমাকে জীবনের শেষসময় পর্যন্ত কারাগারে কাটাতে হবে।
বেলাল আরও জানান, পারিশ্রমিক ছাড়া কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে কখনও ২০ লাখ, কখনও ২৫ লাখ আবার কখনও ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন। একপর্যায়ে থানা পুলিশের হয়রানীর মুখে গত ১৬দিন পর্যন্ত নিজ এলাকা ছেড়ে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ফলে তার (বেলাল) স্ত্রী ও সন্তানকে মুলাদীর বাসায় সরকারী পিয়ন ও নাইটগার্ডের মাধ্যমে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অসহায় বেলাল হোসেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে ন্যায় বিচার পেতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ইউএনও’র অভিযুক্ত বেলাল হোসেন একজন সামান্য অনিয়মিত টেকনিশিয়ান। তার কাছে সরকারী এতো বিপুল পরিমান অর্থ থাকার কথা নয়, সেখানে বেলাল কিভাবে অর্থ আত্মসাত করেছে বিষয়টি রহস্যজনক। এ ব্যাপারে মুলাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে তদন্ত চলছে তাই এখনও সঠিক করে মোট টাকার পরিমান বলা যাচ্ছেনা। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়গুলো পরবর্তীতে গণমাধ্যমকে জানানোর কথা বলে তিনি এ ব্যাপারে আর কোন কথা বলতে রাজি হননি।