নওগাঁয় পত্নীতলায় দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে হরিলুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভরা কাজের মৌসুমে অন্যস্থানে বেশী মজুরীর জন্য শ্রমিকরা কর্মসংস্থান কর্মসূচীর কাজে যোগদান না করলেও তালিকাভুক্ত শ্রমিকদের অর্থ উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনার ভয়াবহুতা প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছে অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচী।
কর্মহীন সময়ে শ্রমজীবি মানুুষকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কমসূচী চালু করে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ২য় পর্যায়ের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচীর অধীনে পত্নীতলা উপজেলায় ১হাজার ৫শত ৪০জন নারী-পুরুষকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যারা ৪০দিন শ্রমিক হিসাবে স্থানীয় বিভিন্ন ছোট ছোট প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ করবেন এবং প্রতিদিন ২শত টাকা মজুরী হিসাবে পাবেন। অনুসন্ধানকালে আরো জানা গেছে সরকারি নির্দেশিত নীতিমালা উপেক্ষা করে কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে শ্রমিক তালিকাভুক্ত করায় প্রকৃত দুঃস্থ পরিবারকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে ভরা কাজের মৌসুমে কর্মসংস্থান কর্মসূচী চালু রাখায় তালিকাভুক্ত শ্রমিকরা অনেকেই কাজে যোগ দেয়নি। মাঠে বোরো ধান কাটার জন্য মজুরী প্রায় চারগুণ বেশী পাওয়ায় প্রকল্পের পরিবর্তে তাঁরা মাঠে ধান কাটার কাজে নিয়োজিত হয়েছে। তালিকাভুক্ত শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করলেও অনুপস্থিত শ্রমিকদের উপস্থিতি দেখিয়ে মজুরী উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে আকবরপুর, মাটিন্দর, নজিপুর, আমাইড়, ঘোষনগরসহ প্রায় সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে জানা গেছে আমাইড় ইউনিয়নে কর্মসংস্থান কর্মসূচীর কাজ শুরু হয় ১০/০৫/২০১৯ তারিখে। ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে মোট ৪৭জন শ্রমিক তালিকাভুক্ত করা হলেও ১মদিন ২১দিন, ২য় দিন ১৮জন ও ৩য় দিন থেকে ১১জন শ্রমিক কাজে যোগ দেয়। কিন্তু প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য খাজামুদ্দিন হাজিরা খাতায় শতভাগ শ্রমিকের উপস্থিতি দেখায়। এ বিষয়ে তালিকাভুক্ত শ্রমিক আমাইড় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ধনতলা গ্রামের ওসমান গণী বলেন, ভরা কাজের সময় ৪০ দিনের কাজ থাকায় প্রকল্পে কাজ করলে আমাদের লোকসান হয়। যখন হাতে কাজ থাকে না সে সময়ে ৪০ দিনের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করার জন্য তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সোয়েব খাঁন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অব্যবস্থাপনা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কারণে শনিবার হতে পত্নীতলা উপজেলার সকল ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী বন্ধ রাখা হয়েছে।