শত প্রতিকুলতা কে পিছনে ফেলে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ (গোল্ডেন প্লাস) পেয়েছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের বিনাই গ্রামের অদম্য মেধাবী তাসরিনা আক্তার। কিন্তু বর্তমান অর্থাভাবে তার কলেজে ভর্তির সংশয় দেখা দিয়েছে। তাসরিনা আক্তার ভবিষ্যতে একজন ডাক্তার হতে চাইলেও তার সে স্বপ্ন বাস্তব রুপ পাবে কি ?
অসহায় হতদরিদ্র রেজাউল সাখিদার অন্যের বাড়ীতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে দিনমজুর ও মা হাছেনা অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে দুই সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করেন এবং বড় ছেলে বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স পড়ছেন ও মেয়ে তাসরিনা আক্তার এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। কখনো কখনো তাসরিনা আক্তার মায়ের সাথে অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজে সহয়োগিতা করেছে। তারপরও থেমে যায়নি তার লেখাপড়ার প্রতি অদম্য ইচ্ছা। তারা অর্ধাহারে অনাহারে থেকেও তাসরিনা আক্তার ও তার বড় ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যায়। পড়ালেখার প্রতি প্রবল ইচ্ছে শক্তি থাকলে দারিদ্রতা কোন বাঁধা নয় তাসরিনা আক্তার সেটায় প্রমান করেছে। সে এ বছর বিনাই জসিমউদ্দিন মেমোরিয়াল বিদ্যানিকেতন থেকে এসএসসি পরিক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ (গোল্ডেন প্লাস) অর্জন করেছে। তার এ সাফল্যে এলাকাবাসী, স্কুলের শিক্ষক সহ সবাই খুশি। কিন্তু অর্থাভাবে তাসরিনা আক্তার কলেজে ভর্তি হতে পারবে কিনা এ নিয়ে সংশয়ে আছে তার অসহায় পরিবার।
তাসরিনা আক্তারের মা হাছেনা বলেন, আমি অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে এক ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি। বড় ছেলে বগুড়া সরকারী আজিজুল কলেজে অনার্স ক্লাসে পড়াশুনা করেন। এখন ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ জোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সে কারণে আমার মেয়ের কলেজে ভর্তি করানো নিয়ে চিন্তায় আছি।
মেধাবী ছাত্রী তাসরিনা আক্তার বলেন, অভাবের সংসারে অনেক দুঃখ কষ্টে লেখাপড়া করেছি। আমার মাও অনেক কষ্ট করেছে। কলেজে ভর্তি হতে পারবো কি না জানি না তবে আমি সবার নিকট দোয়া চাই।
ওই গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই তাসরিনা আক্তারের মধ্যে পড়ালেখার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ দেখেছি। আর্থিকভাবে যদি তাকে সহযোগিতা করা যায় সে ভবিষ্যতে ভাল ফলাফল অর্জন করবে।
তার স্কুলের শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়েও তাসরিনা আক্তার পড়াশুনার প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী তার এভাল ফলাফলে আমরা শিক্ষকরা খুশি। তিনি সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি আহবান জানান উচ্চ শিক্ষা অর্জনে অসহায় দরিদ্র ছাত্রীটির পাশে এগিয়ে আসার জন্য।