জামালপুরে বন্যার পরিস্থিতি মারাত্বক ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। গত ১৬জুলাই বিকাল ৩টা পর্যন্ত যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বিপদ সীমার ১৬৫ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জানিয়েছেন জামালপুর পানি উন্নয়ন (বোর্ডপাউবো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী নবকুমার চৌধুরী এবং পানি মাপক গেজ পাঠক আবদুল মান্নান। তারা জানান.গত ১৯৮৮সালে ১২২ সেঃমিটার এবং ২০১৭সালে ১৩৪ সেঃমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এবার তারচেয়ে বেশী উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অথাৎ গত ১০০ বৎসরের মধ্যে এই সর্বোচ্চ পানি বিপদসীমা অতিক্রম করছে বলে জানিয়েছেন।
ইসলামপুর ষ্ট্রেশন মাস্টার মো.মিজানুর রহমান জানান,দেওয়ানগঞ্জ-মেলান্দহ দুরমুঠ রেলওয়ে ষ্ট্রেশন মধ্যে বিভিন্ন স্থানে রেললাইন পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ সকল ট্রেন যাতাযাত বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা-জামালপুর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে।
অপরদিকে সারা জেলায় ৪৫৪ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৮২টি মাদ্রাসা, ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা প্রতিষ্টানসহ মোট ৬৬৩টি শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
এদিকে জেলা ত্রান ও পুর্ণবাসন অফিস সুত্রে জানাযায়, জামালপুরের ৭টি উপজেলার ৬৮ইউনিয়নের মধ্যে ৪৯টি ইউনিয়নসহ ৩টি পৌরসভা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় প্রায় ৪ লক্ষাধীক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ৪৭৫টি বাড়ি সম্পুর্ণরুপে এবং ১৫৯০টি বাড়ি আংশিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে প্রায় ১০ কিঃমিটার পাকা রাস্তা এবং ২০ কিঃমিটার কাঁচা রাস্তা সম্পূন্নরূপে বিলিন হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা মানুষসহ গৃহপালিত পশু গরু,মহিষ, ছাগল হাঁস, মরগি পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষ গুলো উঁচু বাঁধে,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। বানভাসিদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধা পানির, গো খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
ইসলামপুর উপজেলার সাপধুরী,বেলগাছা,চিনাডুলী,কুলকান্দি ইউনিয়নের যমুনার দ্বীপ চরের লোকজন নৌকার অভাবে তাদের ঘরের ধান চাল এমনকি গৃহপালিত পশু নিরাপদ স্থানে নিতে পারছে না বলে বেলগাছা ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মালেক জানিয়েছেন।
বন্যা কবলিত এলাকার মধ্যে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা চুকাইবাড়ী, চিকাজানী, বাহাদুনাবাদ,চর আমখাওয়া ইউনিয়ন,ইসলামপুর উপজেলার পার্থর্শী কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, ইসলামপুর সদর, পলবান্দা, ইসলামপুর পৌরসভা, গোয়ালের চর,গাইবান্দা, চরগোয়ালীনী ও চরপুটিমারী ইউনিয়ন। মেলান্দহ উপজেলার, মাহমুদপুর, শ্যামপুর, মেলান্দহ পৌরসভা, নাংলা, আদ্রা,ফুলকোচা, ঝাউগড়া, ও ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন। মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা জোড়খালী, বালিজুড়ি ও চর পাকেরদহ ইউনিয়ন। সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা, আওনা, পোগলদিঘা, সাত পোয়া ও কামরাবাদ ইউনিয়ন। বকশিগঞ্জ উপজেলার সাদুরপাড়া, মেরুরচর, বগারচর, ইউনিয়ন, জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষীরচর,তুলশিরচর ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ইসলামপুর এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।