সবার ঘরেই পানি। রান্নার ব্যবস্থা নেই। সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। ঘরে মাচা বানিয়ে উঁচু করে কতক্ষণ থাকা যায়। তার উপর গবাদি পশু নিয়ে এক যন্ত্রনাদায়ক পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিতে হাফিয়ে উঠে দলে দলে শুকনো জায়গার দিকে ছুটছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বানভাসী মানুষ। গত ৫ দিন থেকে বন্যার পানির সাথে যুদ্ধ করে জীবন অতিবাহিত করছেন উপজেলার ব্রক্ষপুত্র ও যমুনা বিভৌত ৪ ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। বাধঁ থাকায় ১৯৮৮ সালের পর ৩০ বছরে ৪ ইউনিয়ন বাদে উপজেলার বাকি ৬ ইউনিয়নের কোন গ্রাম এমন বন্যার কবলে পরেনি। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে অস্বাভাবিক ভাবে পানি বেড়ে সাঘাটা-গাইবান্ধা সড়কের প্রধান ওয়াপদা বাধটি ভেঙে গেলে প্লাবিত হয় ৬ ইউনিয়নের গ্রামগুলো। বিগত ৩০ বছরের রেকর্ড ভেঙে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ৪ ফুট পানি বেড়ে অগণিত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। গত দুইদিনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পরে বোনারপাড়া, ভরতখালী, পদুমশহর ও কচুয়া ইউনিয়নের মানুষ। উপজেলা সদরে আসার জনগুরুত্ত্বপুর্ন ৫টি সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে ভেসে গেছে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সংকুচিক হয়ে এসেছে শুকনো স্থান। এসব এলাকার বানভাসী মানুষ ছুটছে শুকনো জায়গার দিকে। আগ বাটি রেল লাইনের উপর, রেলওয়ে পাওয়ার হাউজ, লোকো সেড এলাকা, পড়ে থাকা মাল ট্রেনের ভিতর, উপজেলা প্রশাসনের নতুন ভবন ও পশ্চিমবাটির ইউনুছ খন্দকারের চাতাল এলাকায় অগণিত মানুষ পরিবার পরিজন ও গরু-বাছুর নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ক্যাম্পাস এলাকায় আশ্রয় নেওয়া আইজল, আসাদুল ও সোলেমান জানান, বাড়ীতে কোমড় পানি হয়েছে। এভাবে কষ্ট করেই কোনমতে জীবন বেচে রাখছি। এসব উঁচু জায়গায় বানভাসী মানুষের সংখ্যা ঘন্টায় ঘন্টায় বাড়ছে। এতে উঁচু জায়গাও সংকুচিত হয়ে আসছে। পশ্চিমবাটির ইউনুছ খন্দকারের চাতাল এলাকায় আশ্রয় নেওয়া বানভাসীদের অনেকেই খাদ্য সংকটে পড়েছেন। এখানে আশ্রয় নিয়েছেন আবদুল জলিল, জামাত আলী, নজির মিয়া ও রহিম বাদশা সহ বেশ কিছু পরিবার। বাড়ী ছেড়ে এসে এখানে আশ্রয় নেওয়া দিনমজুর আবদুর রাজ্জাক জানান, বাড়ি ঘর পানিতে থৈ থৈ হওয়ায় উচুতে এসেছি। খাবার নিয়ে চিন্তা ও পোকা মাকড়ের ভয় সহ কষ্টে দিন পার করছি।