ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বিশ্বাসবাড়ী উচ্চ বিদ্য্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা মিলে শনিবার সকাল ১০ টা থেকে তিন ঘন্টা ব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে এলাকায় নজির বিহীন দৃষ্টান্ত রেখেছেন। ওই দিন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলে বিদ্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রথমে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেন। “ এডিস মশা দুর করি, ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করি” এ শ্লোগান নিয়ে প্রায় আড়াই শত ছাত্রছাত্রী সম্বলিত র্যালিটি বিদ্যালয় পাশ্ববর্তী গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন মেঠোপথ প্রদক্ষিন করেন এবং ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় র্যালিটি থেমে দফায় দফায় পথ সভা করেন। এসব পথ সভার সভাপতিত্ব করেন উক্ত বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম বিশ্বাস। পথসভা গুলোতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা মূলক বক্তব্য দেন, বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান বিশ্বাস ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম প্রমূখ। পথসভা চলাকালিন বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায় সম্বলিত লিফলেট গৃহিনীদের হাতে হাতে বিতরন করেন।
জানা যায়, র্যালি ও পথসভা শেষে বিদ্যালয়ের প্রায় আড়াইশো ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক মিলে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বসতবাড়ী পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব গ্রামগুলো হলো-উপজেলার লোহারটেক বাছার ডাঙ্গী গ্রাম, উত্তর আলমনগর, দক্ষিন আলমনগর, রুস্তম খার বাজার এলাকা ও সর্দার বাড়ী কাজী ডাঙ্গী গ্রামের শতাধিক বসতবাড়ীর আঙিনা। এ পরিচ্ছন্ন অভিযান সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ১২টি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। প্রতি গ্রুপে ২০ জন করে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক মিলে এক একটি গ্রুপের নামকরন করা হয়। প্রতিটি পরিচ্ছন্ন গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন গ্রামের নির্দিষ্ট সীমানার বসতবাড়ীর আঙিনা, বদ্ধ জলাশয় স্থান সহ নোংড়া আবর্জনা পরিস্কার করেন। এতে উক্ত বিদ্যালয়ের চতুরমুখী তিন কি.মি. এলাকার সমস্ত বসতবাড়ী পরিচ্ছন্ন হয়েছে বলে জানা যায়।
উক্ত বিদ্যালয়ের এ নজির বিহীন উদ্যোগ দেখে এলাকার অভিভাবকবৃন্দ, গন্যমান্য ও সুশিল সমাজ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরিচ্ছন্ন অভিযানের পর লোহারটেক বাছার ডাঙ্গী গ্রামের এক অভিভাবক ওমর ফারুক (৪৮) বলেন, “ বিশ্বাসবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় এলাকার স্বার্থে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে আমরা আনন্দিত এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে আজ আমরা অনেক কিছু জানতে পেরেছি”। পার্শ্ববতী সর্দার বাড়ী কাজী ডাঙ্গী গ্রামের আরেক গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভীন জানায়, “ গত ক’দিন আগে পাশের গ্রামের সেলিম বিশ্বাস(৪২) ডেঙ্গু জ্বরে মারা যাওয়ার পর আমরা খুব আতংকের মধ্যে ছিলাম কিন্ত আজকে ডেঙ্গু প্রতিরোধের নিয়মনীতির কাগজ হাতে পেয়ে এবং ছাত্র শিক্ষকদের উদ্যোগ দেখে মনে খুব সাহস পাচ্ছি”।