জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাইয়ে জমি দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের কোদালের আঘাতে মা নিহত এবং তার দুই ছেলে আহত হয়েছে। নিহত হলেন উপজেলার মাত্রাই সোনারপাড়া গ্রামের মোজাহার আলীর স্ত্রী খোতেজা বিবি (৬০)। আর আহত হলেন মোজাহার আলীর ছেলে খলিলুর রহমান (৪০) এবং লুৎফর রহমান (৩৫)। বুধবার দুপুরে উপজেলার মাত্রাই সোনারপাড়া গ্রামের মাঠে এই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে মাত্রাই বাজার এলাকায় দুই পক্ষ অবস্থান নেওয়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে ওই ঘটনায় কালাই থানা পুলিশ ২ জন মহিলাকে গ্রেফতার করেছে।
নিহতের পরিবার ও থানা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার মাত্রাই সোনারপাড়া গ্রামে মোজাহার আলী এবং নুরনবীর, রেজাউল ও মোফাজ্জাল এর মধ্যে প্রায় ৫ বিঘা জমি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই আসছিল। জমাজমি নিয়ে আদালতে মামলাও আছে। এর আগে একাধীকবার এলাকায় ও থানায় ওই দুই পক্ষকে নিয়ে বিচার-শালিসও হয়েছে। মামলা চলমান অবস্থায় জমিগুলো মোজাহার আলীর দখলে আছে। দখলীয় সূত্র ধরে মোজাহার আলী তার দুই ছেলে খলিলুর রহমান ও লুৎফর রহমানকে সাথে নিয়ে বুধবার দুপুরে ওই জমিগুলোতে আমন ধান রোপনের জন্য আইল কাটতে যায়। তা দেখে প্রতিপক্ষ নুরনবী, মোফাজ্জল ও রেজাউলসহ বেশ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ও দেশীয় অস্ত্র সঙ্গে করে ওই জমিগুলো দখল করতে যায়। এই সময় উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এমন ঘটনা শুনে সেখানে মোজাহারের স্ত্রী খোতেজা বিবিসহ বেশ কয়েকজন মহিলা উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষ বাঁধলে নুরনবী বাহিনীর লোকজন খোতেজা বিবির ছেলে খলিলুর রহমান ও লুৎফর রহমানকে বেদম মারপিট করতে থাকে। এই সময় মা তার দুই ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে নুরনবীর লোকজন তাকে কোদাল দিয়ে আঘাত করলে খোতেজা বিবি ও তার দুই ছেলে খলিলুর রহমান এবং লুৎফর রহমান গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে খোতেজা বিবির অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় কালাই থানা পুলিশ প্রতিপক্ষ মৃত লোকমানের স্ত্রী নুরবানু বেগম এবং রেজাউলের স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে গ্রেফতার করেন।
নিহত খোতেজা বিবির স্বামী মোজাহার আলী বলেন, জমি নিয়ে আদালতে মামলা আছে। আর আদালত ওই জমিগুলো আমার দখলে রাখতে নির্দ্দেশ দিয়েছেন। তারপরও নুরনবী, রেজাউল ও মোফাজ্জাল তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার স্ত্রীকে কোদাল দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলেছে এবং দুই ছেলেকে মারপিট করে আহত করেছে। তারা হত্যাকারী। আমি স্ত্রী হত্যার বিচার চাই।
জমি দখলকে কেন্দ্র মা নিহত এবং দুই ছেলে গুরুতর আহত হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে কালাই থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ আবদুল লতিফ খান বলেন, ওই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ইতমধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।