রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীতে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় পদ্মা নদীর তীরের ভাঙনকবলিত পাকুড়িয়া ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী কিশোরপুর-গোকুলপুর খেয়া ঘাট এলাকায় প্রায় এক হাজার জণসাধারণ এ মানববন্ধন করেন।
জানা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে উপজেলার চকরাজাপুর ও লক্ষীনগর এলাকায় শামসুদ্দীন সরকার রিন্টু ও মেরাজ সরকারের নামে বালুমহল লীজ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে শামসুদ্দীন সরকার রিন্টু লিজকৃত এলাকায় বালু উত্তোলন না করে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী কিশোরপুর-গোকুলপুর খেয়া ঘাট এলাকায় ড্রেজার মেশিন দ্বারা নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই উত্তোলন করা বালু রাখা হচ্ছে ফেরিঘাটের পারাপার রাস্তায়। ফলে চলাচল বিঘিœত হচ্ছে পথচারিদের। এছাড়া বিপুল পরিমান ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকে বর্তমানে এই এলাকার সব বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে তারা বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি করেন। পাশাপাশি প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পাকুড়িয়া ইউনিয়নবাসীর আয়োজনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেরাজুল সরকার মেরাজ, নান্টু মন্ডল, সালাউদ্দীন পিন্টু সরকার, মাহাবুল হক নান্টু, আইনাল হক প্রমুখ।
পাকুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মেরাজ সরকার বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার অবগত করার পরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ইউনিয়নবাসী এ মানববন্ধন করেন। আমি এলাকাবসীর সাথে একত্ততা ঘোষণা করেছি।
বালু উত্তোলনকারী শামসুদ্দীন সরকার রিন্টু বলেন, আমার লিজকৃত জায়গায় বালু উত্তোলনের জন্য ড্রেজার মেশিন বসিয়েছি। সেখানে বালু উত্তোলন করা হয়নি। খেয়াঘাটটি আমার নামে লিজ রয়েছে। তবে খেয়াখাটের পাশ দিয়ে ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে। সেখানো কোন বালু উত্তোলন করা হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী শাহিন রেজা বলেন, যে স্থান থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগে মানববন্ধন করা হচ্ছে। সেখান থেকে বালু তোলার কোন সরকারি অনুমতি নেই। বালু উত্তোনকারীদের আগে থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরেও মানববন্ধনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আস্বস্থ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের ৩১ মার্চ বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শ্রমিক, বালু উত্তোলনকারী চক্রের ১১ জন, নৌকা, ড্রেজার আটক করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার করা হয়। পরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে ড্রেজার, নৌকা ও আটক শ্রমিক, ড্রেজার মালিকদের ফিরে দেয়া হয়। তারপরেও বালু উত্তোলন থেমে নেই। ফলে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি ভাঙন থেকে রক্ষার দাবিতে নদীর তীরে এ মানববন্ধন করেন।