প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বছরের প্রথম দিন সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ পালিত হবে। ওই দিন সরকারিভাবে বিনামূল্যে ৪ কোটিরও বেশি শিশুর হাতে তুলে দেয়া হবে ৩৫ কোটিরও বেশি নতুন পাঠ্যবই। এসব পাঠ্যবই ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে গেছে। টানা ১১ বারের মতো এবার ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ উদযাপিত হবে। ২০১০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এ উৎসব উদযাপনের ফলে এটা এখন শিক্ষার্থীদের বছরের প্রথম দিন উৎসর হিসেবে রূপ নিয়েছে।
বছরের প্রথম দিনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে পৌছাতে জেলা-উপজেলা ও বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা থেকে বিদ্যালয় পর্যায় বই গ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। নতুন বইয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের অপেক্ষাও প্রায় শেষের দিকে। আর মাত্র এক দিন পরেই হবে এই বই উৎসব।
রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর ৫টি উপজেলায় জাতীয়করণসহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৮২টি, পরীক্ষন বিদ্যালয় ১টি, এনজিও পরিচালিত ২৯৩টি, কিন্ডারগার্টেন ১৭৯টি, উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ২টি, বেসরকারী ৩১টি অন্যান্য ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০২০ সালে ৯৯৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থী ১ম-৫ম শ্রেণির বইয়ের চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮ শত ২৯ জন। এর মধ্যে ১ম শ্রেণির জন্য চাহিদা রয়েছে ৩৩ হাজার ৯ শত ৭৫ জনের, ২য় শ্রেণির জন্য ৩২ হাজার ১ শত ৩৩ জনের, ৩য় শ্রেণির জন্য ২৯ হাজার ৮ শত ৬০ জনের, ৪র্থ শ্রেণির জন্য ২৮ হাজার ১ শত ৯৯ জনের, ৫ম শ্রেণির জন্য ২৬ হাজার ৬ শত ৬২ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থীর জন্য।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী জানান, রাজবাড়ীর সকল বিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে বই পৌছানো নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন বই উৎসবের মাধ্যমে বিতরণের পালা। আশা করছি কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ছাড়াই সব শিশুর হাতে বই পৌছাতো পারব। সরকার বিনামূল্যে বই প্রদান করছে এতে কোন অভিযোগ আসলে তাৎক্ষনিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বই প্রদানে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলেও তিনি জানান।
বালিয়াকান্দি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চাঁদ সুলতানা জানান, বছরের প্রথম দিনে শিশুরা নতুন বইয়ের ঘ্রান নিতে পারবে সে প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী বই সংগ্রহ করেছি। বই গুলোতে সিল দেয়ার কাজও সম্পন্ন করেছি। এখন শুধু উৎসবের মধ্যে দিয়ে বিতরণের পালা। সদরে বিদ্যালয় হওয়ায় আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে অডিটোরিয়ামে বই উৎসব পালন করা হয়।
স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শহিদুল ইসলাম জানান, বছরের প্রথম দিনে কোমলমতি শিশুদের হাতে বই প্রদানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এরই মধ্যে উপজেলা থেকে চাহিদামত বই সংগ্রহ করেছি। এখন শুধু উৎসবের পালা। এই দিনে অভিভাবকসহ সকল শিশুরা নতুন পোশাকে উৎসবের আমেজে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় সব মিলিয়ে এক ধরনের মিলন মেলায় পরিণত হয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গন।