নিয়ামতপুরে শ্বাশুড়ী-ননদের নির্যাতনে নার্গিস (৩৫) নামের এক গৃহবধুর মৃত্যু ঘটেছে। নিহত নার্গিস সন্তোষ গ্রামের আলিম উদ্দিনের স্ত্রী। তার মৃত্যুর ঘটনায় ওই গৃহবধুর ভাই শহীদুল ইসলাম সোমবার বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় শ্বাশুড়ী ননদসহ ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ননদ মতিজান ((৪২) ও গোলেনুরকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ। শনিবার বিকালে উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের সন্তোষ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিয়ামতপুর থানা সুত্রে জানা যায়, প্রায় ১৮ বছর পুর্বে মান্দা উপজেলার গনেষপুর গ্রামের আব্বাস আলীর মেয়ের সাথে নিয়ামতপুর উপজেলার সন্তোষ গ্রামের রসিমুদ্দীনের ছেলে আলিম উদ্দীনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর থেকে নার্গিসের সাথে তার শ্বাশুড়ী অমিরন বেগমের প্রায় ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। ঘটনার দিন শনিবার বিকালে সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারো বউ-শ্বাশুড়ীর মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বাশুড়ী অমিরন বেগম (৬২) উত্তেজিত হয়ে বউকে প্রহার শুরু করেন। এর কিছুক্ষন পর শ্বাশুড়ী বাড়ির বাহিরে বেরিয়ে এসে একই গ্রামে বসবাসরত তার মেয়ে ও জামাতাকে সংবাদ দেন। সংবাদ পেয়ে মেয়ে মতিজান এবং তার স্বামী আক্কাশ আলী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিছু সময়ের মধ্যে পাশর্^বর্তী গ্রাম ভাতকুন্ড নিবাসী তার অপর মেয়ে গোলেনুর ও তার স্বামী সিদ্দিকও সংবাদ পেয়ে বাড়ীতে হাজির হন। তারা সবাই সম্মিলিত হয়ে আবারো নার্গিসকে মারধর শুরু করে। তাদের এলোপাথাড়ী প্রহারে নার্গিস গুরুতর আহত হন।
এমন ঘটনা জানাজানি হলে পাড়া পড়শীরা ছুটে এসে নার্গিসকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তার বাবার বাড়িতে সংবাদ দেয় ও মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় তার স্বাস্থ্যের আরো অবনতি হতে থাকলে পরদিন রোববার সকালে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে।
নিহত নার্গিসের এসএসসি পরিক্ষার্থী (মালঞ্চী উচ্চ বিদ্যালয়) বড় মেয়ে জান্নাতুন জানায়, ঘটনার দিন শনিবার চাউল নিয়ে তার মার সাথে দাদীর ঝগড়া বাধে। এ সময় তার বাবা বাড়িতে না থাকায় তার ফুফু ও ফুফারা এসে সবাই একজোট হয়ে তার মাকে বেদম প্রহর শুরুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুু করে। তাদের প্রহারে মা গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে মা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি তার মায়ের খুনের বিচার চান।
নিয়ামতপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে যুগান্তরকে জানান, নিহতের ভাই শহীদুল সোমবার বাদী হয়ে নার্গিসের শ্বাশুড়ী অমিরন, তার ননদ মতিজান ও গোলেনুর, নন্দু আক্কাশ আলি ও সিদ্দিক এবং ভাগ্নে মোস্তাকিন ও শহীদকে আসামি করে থানায় মামলা করে। মামলা দায়েরের পর মৃত্যের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় নিহতের ননদ মতিজান ও গোলেনুরকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।