সারাদেশে লুটপাটের রাজত্ব তৈরির মহাযজ্ঞ। এই যজ্ঞ চলে আসছে গত ৪৯ বছর ধরে। একদিকে সরকার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে উন্নয়নের নামে আঙ্গুল ফুলিয়ে কলাগাছে পরিণত করেছে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদেরকে। অন্যদিকে চেটেপুটে খেয়ে আমাদের স্বাধীনতা বিরোধীচক্র করে যাচ্ছে সর্বোচ্চ চেষ্টা দেশ ধ্বংসের। যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর মত অবিরত ধর্ম বিক্রিকারীরা রেখে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ আর সম্পদ। একদিকে ঋণ করছে, অন্যদিকে একের পর এক বাড়ি-গাড়ি-মিল-কারখানা করছে প্রতারকচক্র। প্রতারকরা কেবলই প্রতারক, এদের কোন ধর্ম থাকে না, থাকে না কোন দলীয় আদর্শ বা নীতি-প্রীাতি। ম্যক্সিম গ্রুপ থেকে শুরু করে বিসমিল্লাহ গ্রুপ পর্যন্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজেদেরকে ফেরেশতা প্রমাণের চেষ্টা করলেও প্রকৃত অর্থে এরা পতারক ব্যতিত কিছু নয়। আর একারণেই আজ জাতি খাদের কিনারে। আমাদের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায়। এমন একটা পরিস্থিতিতে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে দুদক। বিদেশে পলাতক পাচারকারীদের ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। এর অংশ হিসেবে ইন্টারপোল ও এফবিআইয়ের সহায়তায় এদের দেশে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে সংস্থাটি।
কেন যেন মনে হচ্ছে ছলাকলার রাস্তা তৈরি করতে এখন- প্রথম অবস্থায় করা ২০০ জনের তালিকার শীর্ষে আছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রশান্ত কুমার হালদার, বেসিক ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম, এনন টেক্সের কর্ণধার ইউনুছ বাদল, শেয়ার কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা লুৎফর রহমান বাদল, যুবলীগ নেতা কাজী আনিসুর রহমান, জজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ, ঢাকা ট্রেডিংয়ের টিপু সুলতান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের আবজাল হোসেন, এমএম ভেজিটেবলসের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন, বিসমিল্লাহ গ্রুপের গাজী সোলেমান ও তার স্ত্রী নওরীন হাসিব। এ ছাড়া ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা তুলে বিদেশে পাচারকারীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। এই তালিকায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত অনেক রাঘববোয়ালের নাম চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে তারাই থাকছেন প্রথম ধাপের তালিকায়।
যদিও অতিতের মত দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ-এর বক্তব্য হলো- যে বা যারা অবৈধভাবে ব্যাংকের বা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে তা পাচার করে বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন, তাদের প্রত্যেককেই অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ইন্টারপোলসহ আন্তর্জাতিক সব আইনি টুলস-টেকনিক প্রয়োগ করে অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। দেশের সম্পদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে। এখানে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। কতিপয় দুর্বৃত্তের কাছে দেশের মানুষ জিম্মি হতে পারে না। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হতে পারে না। যারা ঋণের নামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে পাচার করেছে তাদের ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
কতটা আলোর মুখ দেখা যাবে ভয়ংকর কালোর মাঝে, জানি না। তবে বুঝতে পারছি- লোক দেখানোর জন্য হলেও দুদকের এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তালিকাটি সরকারের কাছেও হস্তান্তর করবে। তালিকা প্রণয়নের সময় জাতীয় সংসদে যে ৩০০ ঋণখেলাপির নাম প্রকাশ করা হয়েছে তাদের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে বলছে। একই সাথে তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- তিনটি বিশেষ শাখা এ নিয়ে কাজ করছে। পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে গঠিত গোয়েন্দা ইউনিট, পরিচালক বেনজির আহমেদের নেতৃত্বে ব্যাংকিং খাত কমিটি ও পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরীর নেতৃত্বে মানি লন্ডারিং কমিটির সদস্যরা নানা মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। কমিটির পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির কাছে চিঠি দিয়ে ঋণখেলাপিদের তালিকা চাওয়া হবে। সব কটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এমডির কাছে চিঠি দিয়ে কার নামে কি পরিমাণ ঋণ অনাদায়ী ও খেলাপি আছে এবং ওই ঋণের টাকা কোথায় বিনিয়োগ হয়েছে- সেই তথ্য চাওয়া হবে। ঋণের কি পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে চলে গেছে, কারা এসব অপরাধে জড়িত সেই তালিকাটি গুরুত্বসহকারে করতে চায় দুদক। এরপর করণীয় ঠিক করা হবে। দুদক তালিকাটি সরকারকে দেয়ার পাশাপাশি গণমাধ্যম সূত্রে দেশবাসীও জানতে পারবে ঋণের টাকা আত্মসাৎ ও পাচারকারীদের বিষয়ে। আর একথা তো সবাই বুঝতে পেরেছে যে, দুদকের প্রথম ২০০ জনের তালিকার বেশিরভাগই পাচার করা টাকায় বিদেশে ব্যবসা করছেন। ওইসব দেশে তারা বিলাসী জীবনযাপন করছেন। কিন্তু তাদেরকে কারা এই সুযোগ গড়ে দিয়েছে? ব্যাংকের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিব বা মন্ত্রীর লিখিত অনুমোদন বা তদবির ব্যতিত কি এত বড় লোন পাওয়া যায়?
উত্তরটা সবার যেমন জানা, তেমন জানা- এই ব্যাংক ঋণ বিষয়ক ইস্যু চলবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ ৪ দিন। আর এই চারদিনেই বলা হবে- যেসব ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তারা পাচার করেছেন ওই ব্যাংকগুলোর ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ বাস্তবতায় দুদক প্রথম ধাপে বিদেশে পলাতক পাচারকারীদের একটা বড় গ্রুপকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে চায়। বাস্তবতা হলো- অবৈধভাবে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কিংবা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তি লন্ডন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাচার করে, সেসব দেশে অবস্থান করছেন তাদের নাম ইন্টারপোলের কাছে পাঠাবে দুদক। একই সঙ্গে এদের বিষয়ে এফবিআইয়েরও সহায়তা নেয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও আছে দুদক-এফবিআইয়ের মধ্যে। কিন্তু তা ওই চুক্তি অবধিই থেকেছে বারবার; পার পেয়ে পগাড়পার হয়েছে দেশের রাজনীতি-অর্থনীতিকে ধ্বংসকারী মানুষগুলো বারবার। কেননা, এরা ব্যাংক চেয়ারম্যান, পরিচালক, সচিব-মন্ত্রীদের সাথে ভাগাভাগি করেই হাজার হাজার কোটি টাকা খেয়েছে। ঋণের কথা বলে মূলত তারা রাজনীতিকওে যোগসাজসে স্বাধীনতার অর্জনকে ধুলিস্যাৎ করেছে। কেননা, তারা জানে- স্বাধীনতা বলতে কিছুই থাকবে না, যাািদ না থাকে অর্থনৈতিক মুক্তি।
কতটা পরিকল্পিত হলে এখানো বলা হয়- ‘দুদকের হাতে যে ২০০ জনের তালিকা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অন্তত ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।’ তার মানে দাঁড়াচ্ছে অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে, তারপর তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে যাবে। তাতে বোঝাই যাচ্ছে- ‘দিল্লি বহুদূর’ বলে সব কাহিনী শেষ কওে দেয়া হবে আগের মতই। প্রমাণিত সত্য- ধর্ম বিক্রিকারী ‘বিসমিল্লাহ গ্রুপ’-এর কর্ণধার খাজা সোলায়মান, তার স্ত্রী নওরীন হাবিব ও পরিচালকরা জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ১২০০ কোটি টাকা বের করে পুরোটাই বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন। আর এখন তারা সবাই এখন কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায়। বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার আসামি ব্যাংকটির সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলাম কানাডায় আত্মগোপনে আছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে যুবলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক কাজী আসিনুর রহমান অন্তত ৫০ কোটি টাকা পাচার করেছেন। তিনি আছেন মধ্যপ্রাচ্যে। শেয়ার কেলঙ্কারির আরেক হোতা লুৎফর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে দুদকের। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান প্রশান্ত কুমার হালদার পাচার করেছেন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কোটি টাকা। যদিও বলা হচ্ছে- তিনি কোন দেশে পালিয়ে আছেন তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ জনতা ব্যাংক থেকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের নামে ৯৯৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পাচার করে দেন। তিনিও দেশে ছেড়েছেন। মোস্তফা গ্রুপের কর্ণধার তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান এমএম ভেজিটেবলসের নামে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে ১৭৪৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পাচার করে দেন। তিনি কানাডায় আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঢাকা ট্রেডিংয়ের কর্ণধার টিপু সুলতান ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ নেন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে। ঋণের ওই পুরো অর্থই তিনি দেশের বাইরে পাচার করে দেন। এনন ট্যাক্সের কর্ণধার ইউনুছ বাদল জালজালিয়াতির মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেন। তিনি শিল্প স্থাপনের নামে ঋণ নিয়ে পাচার করেন। তিনিও গোপনে দেশ ছেড়েছেন। এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে দুদকের হাতে।
এত এত তথ্য উপাত্ত থাকার পরও অভিযোগ বলে বুঝি দুর্নীতিবাজদেরকে পাশকাটিয়ে চলে যাবে বাংলাদেশ সরকারের দুদক! তা না হলে দিনের আলোর মত সত্য যে, ঋণের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছে, তবু বারবার এত এত টাইটেরিঢয়া কেন? কেন বলা হচ্ছে- বিএফআইইউ থেকে ব্যাংকগুলোকে অ্যাকাউন্টের স্থিতি ও আর্থিক লেনদেনের তথ্য দিতে বলা হয়েছে। কেন হেনতেন করে আর্থিক খাতে সরকারের চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে এসব তথ্য নেয়া হচ্ছে। যাদের হিসাব তলব করা হয়েছে- ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। পিঅ্যান্ডএল ইন্টারন্যাশনাল, প্রতিষ্ঠানের পরিচালক উদ্দাব মালিক, মৈত্রী রানী ব্যাপারী ও সোমা ঘোষ। রেফ টাইস ফার্ম, এর পরিচালক রাজিব সোম। কেন এই অবস্থা তৈরি হলো যে, গত দশ বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে চারগুণ। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা! কারণ কি একটাই যে, জাতিকে খাদের কিনারে রেখে স্বাধীন দেশকে পরাধীনতার জিঞ্জির পরিয়ে অর্থনৈ,িতকভাবে দেউলিয়া করে দেয়ার চেষ্টা চলছে! যদি তাই না হয়, তাহলে কিভাবে এত এত মনিচটরিং টিম থাকতেও ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এই ১০ বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।
এর উপর আবার সরকার যাকে তথ্যমন্ত্রী করেছেন, তিনি বলছেন- সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসা হবে সুদ। যেখানে ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাবে জাল-জালিয়াতির ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে যেসব অর্থ বেরিয়ে গেছে সেগুলো এখন আদায় হচ্ছে না। ফলে ওইগুলোকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। সেখানে আবার ‘পাগলারে হাক্কা নাড়াইস না’র পথে এগিয়ে চলছে বর্তমান।
কেন? কারণ কি? মন্ত্রী কি জানেন না যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের প্রায় ৫৬ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন বা রাইটঅফ করা হয়েছে। এ ছাড়াও খেলাপি ঋণ থেকে পুনঃতফসিল করা হয়েছে ৮৪ হাজার কোটি টাকা, পুনর্গঠন করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং ব্যাংকের পরিচালকরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা। এসব ঋণের অধিকাংশই খেলাপি হয়ে যাচ্ছে!
যদি না জানেন, তাহলে জেনে নি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জেনে নিন মাননীয় অর্থমন্ত্রী- ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। মহাজোট সরকারের প্রথম বছর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এ সময়ের মধ্যে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, সোনালী ব্যাংকে হালমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক জালিয়াতি, অগ্রণী ব্যাংকে সানমুন স্টার গ্রুপের জালিয়াতি, জনতা ব্যাংকে ক্রিসেন্ট গ্রুপ জালিয়াতি, ৫টি ব্যাংকে বিসমিল্লাহ গ্রুপের জালিয়াতির ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ওই পুরো সময়টিতে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। সরকারের শুরু থেকে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ড. আতিউর রহমান। এর পর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির। ওই সময়েই ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ। সেই দেশে স্বাধীনতার পর থেকে কোন না কোন ষড়যন্ত্র দানা বেঁধেছে। সেই ষড়যন্ত্রেরই একটা হলো- অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ঋণ উঠিয়ে আমাদেরকে পরাধীন করে দেয়া, অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ পরাধীন হতে যাচ্ছে, একথা যেমন সত্য, তেমন সত্য ২ লক্ষ কোটি টাকা সরকারের ঋণ নেয়াটা সত্যিই পরাধীনতকার ঘন্টা ধ্বাণির মত। তেমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে সেকেন্ড হোম বানিয়ে পালিয়ে যাওয়াটাও দেশকে ভালো না বাসার-প্রতারণা ও প্রতারক বাড়ার লক্ষণ।
অন্তত আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, সবাই মিলে চলুন নিবেদিত থাকি সততা, মেধা, যোগ্যতার সাথে। স্বাধীনতা বা ধর্ম ব্যবসাকে ‘না’ বলে চলুন নিরন্তর এগিয়ে যাই ধর্ম- দেশ-মানুষকে ভালোবেসে...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি