রংপুরের পীরগাছায় রাজমিস্ত্রি সুজন হত্যার ঘটনায় মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত পরকীয়া প্রেমিকা নিলুফা আক্তার নিশা, তার শ^াশুড়ীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রেমিকা নিলুফা আক্তার আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার এক প্রেস বিফিংয়ে এ তথ্য জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগাছা থানার ওসি তদন্ত আজিম উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের প্রতাব জয়সেন গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে সুজন আহমেদ গত ২৫ জানুয়ারি রাতে ফোনে কথা বলতে বলতে বেড়িয়ে যায়। সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। ২৯ জানুয়ারি দুপুরে বাড়ির পাশের একটি ফাঁকা মাঠে সুজনের লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগাছা থানার ওসি তদন্ত আজিম উদ্দিন এক প্রেস বিফিংয়ে বলেন, ‘মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অন্নদানগর ইউনিয়নের রেজাউল করিমের স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিকা নিলুফা আক্তার নিশা (২৪), তার শ^শুরী নাসিমা আক্তার (৪৫), ভাসুর নাজমুল হক (৩৫) ও একাই এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে নুরুল হক (৩৭)কে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে প্রেমিকা নিশি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে নিশি জানান, তার বিয়ের পর প্রতিবেশি দেবর রাজমিস্ত্রি সুজন আহমেদের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার পর থেকেই নিয়মিত মোবাইলে কথা হতো তাদের। নিশির স্বামী ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বিষয়টি স্বামী-শ^শুর জানতে পেরে তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। গত ৬ জানুয়ারি নিশি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসে। এরপর গভীর রাতে দেবর সুজনের সাথে বেশ কয়েক দিন নিশির দেখা ও শারিরিক সম্পর্ক হয়। ঘটনার দিন ২৫ জানুয়ারি রাতে বাড়ির পাশে খড়ের গাদায় পুত্রবধু নিশি ও সুজনকে ধরে ফেলে নিশির শশুর আবদুল জলিল, শাশুড়ি নাসিমা আক্তার ও ভাসুর নাজমুল হক। এ সময় সুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং নিশিকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে তার ঘরে পাঠায়। পরে সবাই মিলে সুজনের লাশ তাদের ঘরে লুকিয়ে রাখে। পরদিন শ^শুড় পুত্রবধু নিশিকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং লাশ গুমের পরিকল্পনা করতে থাকে। ইতোমধ্যে সুজনের নিখোজের বিষয়ে থানায় জিডি করা হলে ওই রাতে কৌশলে লাশ পাশের জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে রাখে হত্যাকারীরা। সেখান থেকে ২৯ জানুয়ারি পুলিশ সুজনের লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে পীরগাছা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, মাত্র ৯দিনের মাথায় এ মামলার মুল তথ্য উদঘাটন করা হয়েছে। গ্রেফতার ৪ জনের একজন প্রেমিকা নিশি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।