ইন্দুরকানীতে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সহ যাবতীয় কার্যক্রম চলছে ২ জন শিক্ষক দিয়ে। প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয় দুটিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর সাউদখালী নন গর্ভমেন্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুধু মাত্র প্রধান শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। উপজেলা বালিপাড়ার চর সাউদখালী নন গভর্ণমেন্ট প্রাইমারী স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টারটির প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তফা ফয়সাল দীঘদিন ধরে পাঠদান সহ প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এ বিদ্যালয়টিতে প্রথম শ্রেণি থেকে ৫ শ্রেণি পর্যন্ত শতাধিক ছাত্র/ ছাত্রী রয়েছে। কিন্তু শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের কাঙ্খিত পাঠাদান থেকে। এতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার সরেজমিনে চর সাউদখালী নন গভর্ণমেন্ট প্রাইমারী স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টারটিতে প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তফা ফয়সাল পাঠদান করাচ্ছেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ছাত্র/ছাত্রীরা জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে একজন স্যার ছাড়া আর কেউরে দেখিনা। আমাদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। একজন স্যার থাকায় রুটিন অনুসারে আমাদের ক্লাস হয় না। এমনকি এই বিদ্যালয়ের মাঝে মাঝে পিটি সহ বিভিন্ন কর্মকা- হয় না। বছর শুরু থেকে ক্লাস না করিতে পারিলে আমাদের লেখাপড়া চরম ক্ষতি হবে। ঠিকমত ক্লাস না হলে আমরা বিভিন্ন পরীক্ষা অংশগ্রহণ করে ভাল রেজাল্ট করব।
ক্ষোভের সাথে অভিভাবক লোকমান, জাকির হোসেন, আঃ রহমান, আঃ কাদের, লিলুফা বেগম ও মোঃ সোহেল জানান, প্রধান শিক্ষক মাঝে মাঝে বিভিন্ন কাজে প্রতিষ্ঠানের বাহিরে থাকেন। তখন ক্লাস হয় না। নিয়মিত ক্লাস না হলে কিভাবে আমাদের সন্তারা লেখাপড়া শিখবে এবং এবিদ্যালয়টি কিভাবে চলবে।
এছাড়া উপজেলার খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক ছাত্র/ছাত্রীদের পাঠদান সহ বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম। শিক্ষার্থীদের পাঠদান সহ সকল কাজ করতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।
খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, এই বিদ্যালয়ে ২০১৭ সালে রিফাত সুলতানা নামে একজন সহকারি শিক্ষক যোগদান করে ছিলে। কিন্তু তার পর থেকে তিনি আর বিদ্যালয়ে আসেননি। অন্য আর একজন সহকারি শিক্ষক বিপিএড ট্রেনিংয়ে আছেন। আমার একার পক্ষে পাঠদান ও অফিসের কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের কাঙ্খিত শিক্ষা থেকে।
বালিপাড়ার চর সাউদখালী নন গর্ভমেন্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারটির প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তফা ফয়সাল জানান, বিদ্যালয়টিতে মৌখিক ভাবে একজন শিক্ষক দিয়েছে ২/৩ দিন আগে। বিদ্যালয়টি নদীর মাঝে চরাঞ্চলে হওয়ায় কোন শিক্ষক থাকে না। আমরা ধরে রাখার জন্য শত চেস্টা করলেও তারা বদলি হয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সহিদুল ইসলাম তিনি জানায়, খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়টির সহকারি শিক্ষক রিফাত সুলতানা অনুপস্থিত থাকায় তাকে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। বালিপাড়ার চর সাউদখালী নন গর্ভমেন্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার বিদ্যালয়টিতে অনেক শিক্ষক দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষকরা যোগদান করে না বিভিন্ন ততবিরে অন্য স্থানে চলে যায়। এ বিদ্যালয় এ সপ্তাহের মধ্যে আরও কিছু শিক্ষক দেওয়া হবে।