নীলফামারীর ডিমলায় ভারতীয় চোরাই গরুসহ দুইজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। এ বিষয়ে ১৫ জনের নামে ডিমলা থানায় মামলা করা হলেও ধরাছোয়ার বাইরে চোরাকারবারী টিমের মূল গডফাদাররা, আসামীর তালিকার অজ্ঞাত কারণে তাদের নাম আসেনি।
রোববার দুপুরে ডিমলা বাবুরহাটের গরুর হাট এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমলা থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৬৭টি চোরাই গরু আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ছাতনাই গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেন ও একই গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম গোপাল কে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু পাচারের অপরাধে আটক করা হয়। এ বিষয়ে ডিমলা থানায় ১৫ জনের নামে একটি মামলা করা হলেও চোরাকারবারীর মূল গডফাদার রয়েছে ধরাছোয়ার বাহিরে। অসুসন্ধান করে জানাযায়, ডিমলা উপজেলা সীমান্তের কালীগঞ্জ, কলোনী, চর খড়িবাড়ী সীমান্তসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে চোরাই পথে গরুসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যে চালান নিয়ে আসার মূল গডফাদার উপজেলা পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই(মিয়াপাড়া) গ্রামের হাবিল মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী(৪৫), পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও পূর্বছাতনাই গ্রামের আঃ হকের ছেলে জাহিদুল ইসলাম(৪৫), পূর্বছাতনাই গুচ্ছগ্রামের সফি উদ্দিনের ছেলে বাবু (৩৫) ও অপর ছেলে নুরু মিয়া(৩৭), পূর্বছাতনাই গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে মতিয়ার রহমান(৪৮),ঝাড়শিংহেরশ্বর গ্রামের আফছার আলী মোল্লান ছেলে জয়নুদ্দি(৩০),শাহিন(২৬), একই গ্রামের আবদুস ছামাদের ছেলে আবদুল মালেক(৩৮), ময়েন উদ্দিনের ছেলে নুর ইসলাম অজ্ঞাত কারণে মামলা হতে বার বার ধরাছোয়ার বাহিরেই রয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী বলছে চোরাকারবারীর মূল হোতারা বার বার পার পাওয়ার কারনেই দিনদিন এ উপজেলার সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে গরুসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের চালান আসার প্রবনতা বেড়েই চলছে। এসব চোরাকারবারীর মূলহোতাদের আইনের আওতায় আনলেই চোরাকারবারী টিম নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে। গরু ও মাদক দ্রব্যের চালান পারাপার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষদের। সামান্য কয়েকশ টাকার চুক্তিতে গরু আনতে যাওয়া অনেকেই লাশ হয়ে ফিরছেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে। সে সব পরিবারের বাকী সদস্যরা একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চলতি বছরের ১৫ই জানুয়ারী মাসে উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাতনাই গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর একমাত্র কর্মক্ষম ছেলে খলিলুর রহমান(৪০)চোরাই পথে বাংলাদেশের খালপাড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তে গরু আনতে গেলে ভারতীয় টহলরত বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হন। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার একই ইউনিয়নের কালীগঞ্জ গ্রামের নুর মোহম্মদের ছেলে বাবুল মিয়া(২২) ও ঝাড়সিংহেরশর গ্রামের গোলজার রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম(১৪) চরখড়িবারী সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে গরু আনার জন্য ভারতে প্রবেশ করলে ভারতীয় টহলরত বিএসএফ তাদের উপড় গুলি ছুড়ে। এ সময় বিএসএফ এর গুলিতে ঘটনাস্থলেই বাবুল মিয়া নিহত ও সাইফুল ইসলাম আহত হয়। আহত সাইফুল এখনো ভারতীয় জেলে আটকা রয়েছে আর বাবুলের লাশ ৭ দিন পর বাংলাদেশে হস্তান্তর করেছে ভারত। বাবুলের মৃত্যুতে কয়েকদিন চোরা কারবারীরা নিশ্চুপ থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যে আবারো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রতিদিন ডিমলা উপজেলা সদরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে সন্ধা ঘনিয়ে এলেই শ্যালো চালিত(ভটভটি) দিয়ে ভারতীয় শত শত চোরাই গরু পারাপার করা হচ্ছে। আর দির্ঘদিন হতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই চোরকারবারী টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই(মিয়াপাড়া) গ্রামের হাবিল মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী, পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও পূর্বছাতনাই গ্রামের আঃ হকের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, পূর্বছাতনাই গুচ্ছগ্রামের সফি উদ্দিনের ছেলে বাবু ও অপর ছেলে নুরু মিয়া, রোস্তম আলীর ছেলে মতিয়ার রহমান, ঝাড়শিংহেরশ্বর গ্রামের আফছার আলী মোল্লান ছেলে জয়নুদ্দি, শাহিন, একই গ্রামের আবদুস ছামাদের ছেলে আবদুল মালেক, ময়েন উদ্দিনের ছেলে নুর ইসলাম।
ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে ডিমলা থানায় ১৫ জন নামীয ও অজ্ঞাত ১০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যদি কোন আসামি বাদ পরে থাকে তবে তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।