নারী দিবস এলেই দিনভর রাজনীতি-শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সমাজ ও অর্থনৈতিক অঙ্গণে নিবেদিত থাকা কিছু নারীকে পুরস্কার দেয়ার আয়োজন করা হয়। উচ্চারিত হয়- ‘পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর চিরকল্যাণকর-অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী অর্ধেক তার নর...’
নারী দিবসে স্বাধীনতা-স্বাধীকার-অধিকার আর শ্রদ্ধার কথা খুব ভালোভাবে উচ্চারিত হলেও সারা বছর নারী ও শিশু নির্যাতন চলতেই থাকে। অথচ গানে গানে নারীবন্দনা নিরন্তর এগিয়ে চলেছে আলোর জন্য-ভালোর জন্য। ‘নহ মাতা নহ কন্যা/নহ বঁধু সুন্দরী রূপসী/হে নন্দনবাসিনী উর্বশী’- এ গানের বাণীই বলে দিচ্ছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীতে নারীর অবস্থান কত ওপরে রয়েছে। তবু বরাবর নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা কেবল বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন বয়সের নারীরা তো বটেই, এমনকি মেয়ে শিশুরাও ভয়ংকর যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের একই সাথে নির্মমভাবে হত্যাও করা হচ্ছে। এই তান্ডব চলছে রাজধানী থেকে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত দেশের সবখানেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বলতে পারি- গত ২ মাসে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৭৫৪ জন নারী ও শিশু। অন্যদিকে শুধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৬৬ জন নারী। এই হিসাব শুধু থানায় দায়ের করার মামলার ভিত্তিতে করা হয়েছে। বাস্তবে সংখ্যা অনেক বেশি। সব মিলিয়ে অবস্থা এতটাই ভয়াবহ হয়ে পড়েছে যে, দেশের প্রতিটি পরিবারই আজকাল প্রচন্ড আতংকের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। কবে কখন কোথায় কার প্রিয় সন্তান স্কুল, কলেজ বা কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে বখাটে দুর্বৃত্তদের কবলে পড়বে এবং সম্ভ্রম হারানোর পাশাপাশি জীবনও হারাবে সে কথা জানা নেই কোনো পিতা-মাতারই। পরিস্থিতির এতটাই অবনতি ঘটে চলেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে পিতা-মাতা বা বড় কেউ সঙ্গে থাকলেও বখাটে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। তাদের ওপরও হামলা চালানো হয় এবং তাদের চোখের সামনে থেকেই ছিনিয়ে নেয়া হয় টার্গেট করা নারী ও শিশুদের। ভাগ্য ভালো থাকলে কয়েক ঘণ্টা কিংবা দু’-চারদিন পর ওই নারী ও শিশুদের খোঁজ পাওয়া যায়। পথের ধারে কিংবা বনে-জঙ্গলে পড়ে থাকে তারা। আর ভাগ্য খারাপ হলে পাওয়া যায় তাদের লাশ। ২ মাসে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার ৭৫৪ জন শিশুর মধ্যে ৩৩০ জনকেই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুধু তা-ই নয়, বেঁচে থাকা ৩৬ জন শিশু আত্মহত্যাও করেছে। নারীদের ক্ষেত্রেও ঘটেছে ভয়াবহ ঘটনা। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৬৬ জন নারী। দুর্বৃত্তরা শুধু ধর্ষণ করেই থেমে যায়নি, ধর্ষণের পর ২৬ জন নারীকে হত্যাও করেছে। তাছাড়া ধর্ষিতাদের মধ্যে ৭ জন লজ্জায় ও অপমানে আত্মহত্যা করেছে। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে ৪৬ জন নারীর ওপর। এভাবেই অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে চলেছে নারী ও শিশু নির্যাতনের ভয়ংকর কর্মকান্ড। শুধু ধর্ষণ নয়, অন্যকিছু পন্থায়ও পা বাড়াচ্ছে বখাটে দুর্বৃত্তরা।
আমরা ভুলে গেছি- সিলেটের এক কলেজ প্রাঙ্গণে ওই কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগমকে প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছিলো বদরুল নামের ছাত্রলীগের এক সন্ত্রাসী। খাদিজা নাকি তার প্রেম প্রত্যাখ্যান করেছে! আর তাই চাপাতির এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর আহত খাদিজা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে গিয়েছিল। হামলাকারীর বিরুদ্ধে কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সত্য কিন্তু এখনো, প্রায় মাস পেরিয়ে গেলেও পরিপূর্ণরুপে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি খাদিজা। বিষয়টি সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল। প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটলেও তা গণমাধ্যমে আসে মাত্র ১০%। বাকিটা থেকে যায় অন্ধকারে। আমার যতদূর মনে পড়ে- খাদিজার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ঝিনাইদহে এক স্কুল ছাত্রীকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছিলো এক বখাটে যুবক। এর পরপর প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় গাজীপুরের কুতুবদিয়ায় মুন্নি আক্তার নামের এক স্কুলছাত্রীকে তার নিজের বাসায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিলো এক বখাটে। এরও পাঁচদিন আগে দিনাজপুরে পাঁচ বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর ধর্ষণ করা হয়েছিলো। রাজধানীর দক্ষিণ খানে বাসায় ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বজনদের সামনেই এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিলো একদল দুর্বৃত্ত। এর পরের রাতে পুরনো ঢাকার লালবাগে নিজের বাসায় এক নারীকে ধর্ষণ করেছিলো তিন বখাটে যুবক। একই দিন ধামরাইয়ের কাতর বাইল্যা গ্রামে বাসায় ঢুকে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছিলো স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি; এ সময় গণমাধ্যম সংবাদ যেই হারে প্রকাশ করেছিলো, সেই হারে এখন আর প্রকাশ করে না। বিচারও হয় না অপরাধীদের। বেকসুর খালাসও পায় অনেক আসামী।
এমন অন্যায় আর অপরাধের রাজ্য নির্মাণে নীতিহীন মানুষগুলো এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠছে যে, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির পাশাপাশি পথে-ঘাটে নারীদের উত্ত্যক্ত করার কর্মকান্ডও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। মাত্র ৩ মাসে ৮৩১ জন, ১০১৪ জন, ৬৪৫ জন, ৪৭০ জন, ৪৪৪ জন এবং ৩২৮ জন নারী ও শিশু উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছে। উত্ত্যক্ত হওয়ার কারণে লজ্জায় আত্মহত্যা করেছে ১৪ জন। ধর্ষণের পর ৪ জন নারীকে হত্যাও করা হয়েছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে অনেক স্থানে। যৌন নির্যাতন কেন বেড়ে চলেছে? এমন প্রশ্নের মুখে লআমার কেবলই মনে হয়- সুশাসন না থাকায় কোনো অপরাধীকেই বিচারের মুখোমুখি করা যায় না। আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা সহজেই পার পেয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীদেরে রাজনৈতিক পরিচয়কে ব্যবহার করা হয়। তারা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকায় পুলিশ সহজে মামলা নিতে চায় না। মামলা নিলেও এমনভাবেই অভিযোগপত্র দাখিল করে যাতে হাতেনাতে ধরা পড়া অপরাধীরাও জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। বাস্তবেও তারা বেরিয়ে আসে এবং এসেই নতুন নতুন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এভাবে সব মিলিয়ে এমন এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যখন বখাটে-দুর্বৃত্তরা ধরেই নিয়েছে যে, অপরাধ যতো মারাত্মকই হোক না কেন, তার জন্য কখনো শাস্তি পেতে হবে না। কথা শুধু এটুকুই নয়। এমন অভিযোগও সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, ভিক্টিম তথা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও তার অভিভাবকদের ভয়-ভীতি দেখিয়েও মামলা দায়ের বা পুলিশের কাছে যাওয়া থেকে নিবৃত্ত করা হয়। জীবনের ভয়ে এবং নতুন করে আবারও আক্রান্ত হওয়ার আশংকার কারণে বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত ও তাদের স্বজনরা নীরব থাকাকেই নিরাপদ মনে করে। এই নীরবতাকেও সমাজবিজ্ঞানীরা অপরাধ বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ। এভাবে বাংলাদেশের মতম ধর্মভীরু-সভ্য দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। বিশ্বের কোনো দেশেই এ ধরনের যথেচ্ছ যৌন নির্যাতন চলতে দেয়া হয় না। সব দেশে বরং আইনানুযায়ী বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। আমি চাই- বাংলাদেশেও নারী ও শিশুদের অধিকার ও সম্মান রক্ষার লক্ষ্যে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হোক; উচ্চারিত হোক-‘আমারে যে ডাক দিবে এ জীবনে তারে বারবার/ফিরেছি ডাকিয়া/সে নারী বিচিত্র বেশে মৃদু হেসে খুলিয়াছে দ্বার/থাকিয়া থাকিয়া।’ উপলব্ধি ও অসীমের সন্ধান বারবার সমবেত হয় রবীন্দ্রনাথের গানে- ব্যক্তির সীমানা ছাড়িয়ে নারী হয়ে ওঠে রূপক। ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে’ গানটি তারই সার্থক প্রকাশ। ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক!’ গানটি বলে দিচ্ছে রবীন্দ্রনাথ তার গানে কোনো নারীকে আলাদা করে না-দেখে বরং প্রকৃত ভালোবাসার আঁধার হিসেবেই দেখতে চেয়েছেন।
এভাবে দেখতে চাই বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে- আমরা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানেও দেখেছি শাশ্বত নারীর জয়গান। ‘আলগা কর গো খোঁপার বাঁধন’ গানটিতে নারীর রূপ বর্ণনা করেছেন শৈল্পিক হাতে। তার এ রকম আরেকটি গান- ‘চেয়ো না সুনয়না/আর চেয়ো না এ নয়ন পানে।/জানিতে নাই ক বাকি/সই ও আঁখি কী যাদু জানে’। আমি মাকে দেখিনি, কিন্তু মাকে শ্রদ্ধা করতে জানি। শিখেছি মা মানে কেবল নারী নয়; অনন্য মানুষ-সাহসীনী। আধুনিককালেও সঙ্গীতে নারীর অবস্থান অনেকটাই সুসংহত। বিশেষ করে দেশাত্মবোধক গানে নারী হয়ে উঠেছেন মাতৃতুল্য। আবু জাফরের লেখা ও সুরে ফরিদা পারভীনের (সহশিল্পী আবু জাফর) ‘গাওয়া এই পদ্মা এই মেঘনা’ গানটির সঞ্চারী অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী- ‘এখানে রমণীগুলো নদীর মতো, নদীও নারীর মতো কথা কয়’। আর বেশকিছু দেশাত্মবোধক গানেই মা কিংবা জননী শব্দটি রয়েছে। আর আধুনিক গানেও নারীকে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে অত্যন্ত সাবলীলভাবে। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুরে লুইপা গেয়েছেন ‘নারী কি এতই নগণ্য’। ‘আমি শিখা’ শিরোনামের একটি গানে নারী মানেই শুধু মা, জননী, জায়া, বোন নয়- নারীরা যে গড়তে পারে, পাখির ডানার মতো নিজেকে মেলে ধরে সামাজিক উন্নয়নে সমান অবদান রাখে, তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে গানটির মাধ্যমে। তবু বাংলাদেশে সকাল-দুপুর নারী ও নির্যাতন বৃদ্ধিরোধে আইনের প্রয়োগ কঠিনভাবে নেয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এতে করে অপরাধীরা অপরাধ থেকে সরে আসবে, বাংলাদেশে শিশু-নারী হবে নিরাপদণ। অবশ্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী২০০৩) এর ৯ ধারায় ধর্ষণ সম্পর্কে বলেছে যে, যদি কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত ষোল বৎসরের অধিক বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি ছাড়া বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তার সম্মতি আদায় করে, অথবা ষোল বৎসরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহলে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবেন। একই সাথে বলা হয়েছে- দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণ- ১ম: মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, ২য়: মেয়ের অনুমতি ছাড়া, ৩য়: মৃত্যুভয়ে বা আঘাত দেওয়ার কারণে সম্মতি নিয়ে, ৪র্থ: সম্মতিতে, যখন মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছেলেটি সম্মতি আদায় করে ছেলেটি জানে ভবিষ্যতে সে মেয়েটিকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করবে না; ৫ম: তার সম্মতি বা সম্মতি ছাড়া, যখন ভিক্টিমের বয়স চৌদ্দ বছরের নিচে হয়।
প্রতিদিন নারী ধর্ষিত হচ্ছে, শিশু নির্যাতিত-ধর্ষিত হচ্ছে। এমন একটা পরিস্থিেিত ধর্ষণের শাস্তি স্মরণ করিয়ে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি জানানো প্রয়োজন জনগনকে যে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ ধারায় বলা আছে- (১): কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ভোগ করবেন। এবং এর অতিরিক্ত অর্থদন্ডও তাকে দেয়া যেতে পারে। ধারা ৯(২): ধর্ষণের ফলে বা ধর্ষণের পড়ে অন্য কোন কাজের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে ধর্ষণকারী মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ভোগ করবেন। এছাড়াও তাকে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হবে। ধারা ৯(৩): একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে এবং ধর্ষণের কারণে ওই নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে তাহলে ধর্ষকরা প্রত্যেকেই মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবেন। এছাড়াও তাদেরকে অনূন্য এক লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হবে। ধারা ৯(৪): যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে (ক) ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- এবং এর অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন। (খ) যদি ধর্ষণের চেষ্টা করেন তাহলে ওই ব্যক্তি অনধিক দশ বছর কিন্তু অনূন্য পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ-ে দন্ডিত হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন। মনে রাখতে হবে- ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর নারীদের করণীয় হলো- ১. ধর্ষণের পর একা থাকবেন না, কোনো বান্ধবী বা আত্মীয়ার সাথে যোগায়োগ করুন, ঘটে যাওয়া ধর্ষণ নিয়ে কথা বলুন এবং তাঁর সাহায্য নেয়া; ২. গোসল, খাওয়া-দাওয়া, ধূমপান, বাথরুম যাওয়া - সম্ভব হলে এসব বন্ধ রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে চলে যান৷ অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে যাবার আগেই ডাক্তারি পরীক্ষা করানো; ৩. হাসপাতালে যাওয়ার পর যদি ‘এমারজেন্সিতে' কারো সাথে এ বিষয়ে কিছু বলতে না চান, তাহলে শুধু ‘‘আমাকে এক্ষুনি একজন স্ত্রী বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলতে হবে’। ৪. ধর্ষণকারী যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, তার সব তুলে রাখুন৷ যেমন অন্তর্বাস, প্যাড ইত্যাদি৷ সম্ভব হলে এসব জিনিসের ছবিও তুলে রাখুন। ৫. নিজেকে দোষী ভাববেন না৷ কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে, শুধু সে একাই এর জন্য দায়ী, অপরাধী৷ আপনি নন৷ এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার নিকটবর্তী থানায় এজাহার বা অভিযোগ দায়ের করুন। পুলিশ কর্মকর্তার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে চেষ্টা করতে হবে। আমার মত অবিরত তাদেরকে ভাবতে হবে, যারা দেশের রাজনীতি-শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি- প্রশাসন-সমাজ-আইন ও ধর্মীয় অঙ্গণে প্রতিষ্ঠিত। তারা সবাই মিলে ধর্ষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেলে আমার মা, আমার বোন, আমার কন্যা নিরাপদ থাকবে বলে বিশ্বাস করি...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি